আবু তাহের
বাবাকে নিয়ে ওপেন হার্ট সার্জারি করাতে ভারতে এসে ভয়ানক আতান্তরে পড়েছেন বাংলাদেশের যুবক জাফর হুসেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি আটকে রয়েছেন চেন্নাইয়ে। কলকাতায় ফেরার বিমানের টিকিট পাচ্ছেন না। বাবা আবু তাহের ছাড়াও জাফরের সঙ্গে রয়েছেন ভাই আব্দুল ওয়াদুদ।
সোমবার সন্ধ্যায় ফোনে যোগাযোগ করা হলে জাফর বলেন, ‘‘কলকাতা পৌঁছনো জরুরি। সেখান থেকে প্রয়োজনে সড়কপথে বাংলাদেশের সীমান্তে গিয়ে দেশে ফেরার চেষ্টা করতে পারব। কিন্তু, চেন্নাইয়ে আটকে থাকলে কী হবে জানি না।’’
ভারত থেকে সমস্ত আন্তর্জাতিক উড়ান ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ। ফলে, বিমানে তাঁরা বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন না। ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারতে অপেক্ষা করলেও নিস্তার নেই। কারণ, ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার সেখানে লকডাউন ঘোষণা করে দিয়েছে। ফলে, ২৬ তারিখের আগে দেশে না ফিরতে পারলে ৪ এপ্রিলের আগে তাঁদের পক্ষে ফেরা মুশকিল। এ দিকে ভারতের সমস্ত অভ্যন্তরীণ উড়ান আজ, মঙ্গলবার রাত থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে আজ সন্ধ্যার মধ্যে কলকাতায় পৌঁছতে না পারলে জাফর আটকে যাবেন চেন্নাইয়ে। এখনও হোটেলে রয়েছেন। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতে কত দিন তাঁদের হোটেলে রাখা হবে সে নিয়েও তাঁর সন্দেহ রয়েছে।
জাফরদের বাড়ি বাংলাদেশের নোয়াখালিতে। বাবা আবু তাহেরের হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা অনেক দিনের। ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখ আবুকে নিয়ে ছোট ছেলে আব্দুল চলে আসেন ভারতে। ভর্তি করানো হয় চেন্নাইয়ের হাসপাতালে। দীর্ঘ চিকিৎসার পরে ঠিক হয়, তাঁর ওপেন হার্ট সার্জারি হবে। তখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কোনও প্রভাবের কথা জানা যায়নি। অস্ত্রোপচারের খবর পেয়ে ১২ মার্চ জাফর আসেন ভারতে। তার পর থেকে তাঁরা তিন জনে চেন্নাইয়ে।
আগে কেন ফিরলেন না?
জাফর বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচার শেষ হয়ে মাত্র দু’দিন আগে আবুকে ছেড়েছে। আজ সকালে সেলাই কাটার জন্য ডাকা হয়েছিল। সেটাও হয়ে গিয়েছে। আমরা স্থানীয় এক এজেন্টকে ধরে প্রথমে ২৭ মার্চের কলকাতায় ফেরার টিকিট কেটেছিলাম। কিন্তু, সোমবার সকালে পরিস্থিতি বুঝে সেই টিকিট বদল করে ২৫ তারিখে আনা হয়েছিল। এখন বিকেলে জানতে পারছি, ২৪ তারিখের পরে কোনও উড়ান চলবে না। এখন কোথাও টিকিট পাচ্ছি না। আমি এখন বিমানবন্দরে ছুটছি। কোনও ভাবে যদি কলকাতার তিনটি টিকিট পাওয়া যায়।’’
জাফর জানিয়েছেন, আগামী কয়েক মাস ভারতে কী পরিস্থিতি হবে কেউ জানেন না। চেন্নাইয়ে তাঁদের ভাষা নিয়ে খুব সমস্যা হচ্ছে। সেখানে আটকে গেলে ভয়ানক সমস্যায় পড়বেন। কলকাতায় চলে এলে ভাষার সমস্যা তো হবেই না। তার উপরে ২৬ তারিখের আগে তাঁরা সড়কপথে সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ঢোকার আপ্রাণ চেষ্টা করতে পারবেন।