অমৃতা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া ছবি।
করোনা-আতঙ্কে মধ্যে সবাই যখন পরস্পরের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন, তখনই এক বিপরীত ছবি উঠে এল সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োতে। সেখানে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে এক পরিবারকে হেনস্থার অভিযোগ উঠছে। ওই পরিবারের এক মহিলা একটি বিমান সংস্থায় কাজ করেন। তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সংক্রমণ হয়েছে, আর তাঁরা নাকি এলাকায় তা ছড়াচ্ছেন, এই অভিযোগে বার বার তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে। যদিও তাঁদের মধ্যে রোগের কোনও লক্ষণ নেই বলে জানিয়েছেন ওই মহিলা।
শিব আরুর নামে এক সাংবাদিকের ভেরিফায়েড টুইটার হ্যান্ডলে আজ মঙ্গলবার ভিডিয়োটি পোস্ট হয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি টুইটার হ্যান্ডলে আপলোড হয়েছে ভিডিয়ো। তারই একটিতে জানানো হয়েছে এই মহিলার নাম অমৃতা। গাড়ির পিছনের আসনে বসে ভিডিয়োটি মোবাইলে রেকর্ড করেছেন এই বিমান কর্মী। এবং সেটি ছড়িয়ে দেওয়ার আবেদন করেছেন। একাধিক টুইটার হ্যান্ডলে ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়ে, ভিডিয়ো শিবও তাঁর অ্যাকাউন্টে আপলোড করেন।
দু’ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের ভিডিয়োতে অমৃতাকে প্রায় কান্না-ভেজা গলায় বলতে শোনা যাচ্ছে, কী ভাবে এলাকার লোকজন তাঁর পরিবারকে হেনস্থা করছেন। ওই মহিলা বলেছেন, পরিষেবা ক্ষেত্রে থাকার জন্য তাঁদের অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তবে তাঁর সংস্থা কর্মীদের করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য যথা সম্ভব চেষ্টা করে যাচ্ছে। এমনকি, সাধারণ মানুষ যতটা না সুরক্ষিত তার থেকেও তাঁরা বেশি সুরক্ষিত ও সাবধানে রয়েছেন বলেও দাবি করেন অমৃতা। তিনি জানান, যদি সত্যিই ভাইরাস আক্রান্ত হতেন তা হলে অসুস্থ হয়ে পড়তেন, নিজে তা বুঝতেও পারতেন। কিন্তু তেমন কোনও উপসর্গই তাঁর মধ্যে নেই। তাঁরা নিয়মিত নজরদারির মধ্যে থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি সুস্থ আছেন।
আরও পড়ুন: অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে বেরলেই পুলিশ ধরিয়ে দিচ্ছে ‘আমি সমাজের শত্রু’ পোস্টার
গুজবের বিরুদ্ধে প্রশাসনের এত প্রচারের পরেও ওই এলাকার মানুষ গুজব ছড়াচ্ছেন। তাঁরা নাকি বলে বেড়াচ্ছেন, অমৃতা ও তাঁর মা, বোন করোনাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত। শুধু তাই নয়, তিনি যখন বাড়িতে থাকছেন না, তখন তাঁর মা ও বোনকে স্থানীয় মানুষ এসে হেনস্থা করছেন। এর জেরে তাঁর মা, বোন বাজারেও যেতে পারছেন না।
আরও পড়ুন: কমছে দূষণ, লকডাউনের মুম্বইয়ের তটের কাছে এসে খেলা করছে ডলফিন
অমৃতা শুধু সাধারণ মানুষ নয়, স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভিডিয়োতে। সেই সঙ্গে তাঁর আরও দুই সহকর্মী একই সমস্যায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, তাঁরা নিজেদের কর্তব্য পালন করতে গিয়ে এমন হেনস্থার মুখে পড়ছেন। এই ভিডিয়োর মাধ্যমে তিনি মানুষকে যুক্তি দিয়ে ভাবতে ও গুজব না ছড়াতে অনুরোধ করেছেন।
আরও পড়ুন: বাড়িতেই ফ্রিতে পৌঁছে যাচ্ছে পিৎজা, মিলছে বিনামূল্যে থাকার জায়গাও
শিব ভিডিয়োটি পোস্ট করে একই বার্তা দিয়েছেন, অযথা গুজব যেন না ছড়ান কেউ। পোস্ট হওয়ার পরই ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিয়োটি। পোস্ট হওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যে সেটি প্রায় এক লাখ ৮৪ হাজার বার দেখা হয়েছে। সেই সঙ্গে রিটুইট হয়েছে প্রায় চার হাজার বার। প্রচুর নেটাগরিক ওই মহিলার প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে এমন গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি জটিল না করার আবেদন করেছেন সকলের কাছে।
দেখুন সেই ভিডিয়ো: