এই লেখা নিয়েই বিতর্ক। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
ফি বৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবিতে জেএনইউ-এর ছাত্র আন্দোলনে আচমকাই মাথা তুলল ‘বিবেকানন্দ-বিতর্ক’! যার মধ্যে বাম বনাম সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ ছাত্র সংগঠনের সংঘাতের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন অনেকে।
ছাত্র বিক্ষোভের মুখে গতকাল বর্ধিত ফি আংশিক ভাবে প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছিলেন জেএনইউ কর্তৃপক্ষ। কিছুটা সুরাহা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল দারিদ্র সীমার নীচে থাকা পড়ুয়াদের। কিন্তু পড়ুয়ারা তা মানতে নারাজ হওয়ায় বৃহস্পতিবারও বিক্ষোভ চলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। তারই মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়। রাতে উপাচার্য এম জগদেশ কুমার জানান, ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে অপরাধীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। থানায় এফআই আর করা হবে।
জেএনইউয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তৈরি হয়েছে স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তি। এখনও উন্মোচন না-হওয়ায় গেরুয়া কাপড়ে ঢাকা। সকালে দেখা যায়, তার নীচে লাল কালিতে অশালীন শব্দ লিখেছে কেউ। বক্তব্যের মূল লক্ষ্য গেরুয়া শিবির। মূর্তি-ঢাকা কাপড়ের একটি অংশও ছেঁড়া। স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তির নীচে এমন সব শব্দ লেখা থাকায় বিতর্ক শুরু হয়। পরে সেই লেখা মুছে দেওয়া হলেও, বিতর্ক থামেনি। আর এর দায় নিয়ে পরস্পরকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শানিয়েছে বাম ছাত্র সংগঠন এবং এবিভিপি।
বিবৃতিতে বাম ছাত্র সংগঠন জেএনইউএসইউ-এর দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। এমন কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও পড়ুয়া সমর্থন করেন না। জেএনইউয়ের বদনাম রটিয়ে ফি বৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি থেকে নজর ঘোরাতেই দক্ষিণপন্থীদের এই চক্রান্ত। উল্টো দিকে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র দাবি, পড়ুয়াদের দাবির জন্য লড়াই করা বাম ছাত্র সংগঠনগুলির একমাত্র লক্ষ্য নয়। বরং এ ধরনের আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের মতাদর্শ পড়ুয়াদের মগজে সেঁধিয়ে দেয় তারা। বোঝানো হয়, বাড়ির দেওয়ালে লেনিনের ছবির জায়গা হতে পারে, কিন্তু স্বামীজির নয়। জেএনইউয়ে এবিভিপি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুজিত শর্মার কথায়, ‘‘এই লজ্জাজনক ঘটনা ওই মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ।’’ বাম ছাত্র সংগঠনের পাল্টা অভিযোগ, তাদের ঘাড়ে দোষ চাপাতে গেরুয়া শিবিরই যে এ কাজ করেনি, তার নিশ্চয়তা কোথায়? বাম ছাত্র সংগঠন এআইএসএ-র প্রেসিডেন্ট এন সাই বালাজির প্রশ্ন, ‘‘হঠাৎ বিবেকানন্দের মূর্তিতে এমন অপকর্ম সন্দেহজনক নয় কি?’’