মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। —ফাইল চিত্র
কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিতে গিয়ে বিতর্কে জড়ালেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। গত কাল শপথ নিয়েই তিনি আশ্বাস দেন, যে সব সংস্থা রাজ্যের ৭০ শতাংশ যুবককে চাকরি দেবে তাদের সরকার উৎসাহ ভাতা দেবে। কারণ, রাজ্যে কাজের সুযোগ তৈরি হলেও সেখানে কাজ করছেন বিহার ও উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দারা। কমল নাথের এই মন্তব্যে রাজ্যগুলির মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিতর্ক বাড়ায় রাহুল গাঁধী বলেন, ‘‘আমি কমল নাথের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’’
গত কাল ভোপালে কমল নাথ বলেন, ‘‘মধ্যপ্রদেশে বহু শিল্প হচ্ছে। সেখানে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের লোকেরা এসে কাজ করছেন। আমি তাঁদের সমালোচনা করছি না। কিন্তু এতে রাজ্যের যুবকেরা বঞ্চিত হচ্ছেন।’’ ঘটনা হল, কমল নাথের নিজেরও জন্ম উত্তরপ্রদেশে। তা উল্লেখ করে টুইটারে এক জন লিখেছেন, ‘‘কমল নাথ তো নিজেই কানপুরের। আবার উনিই বলছেন, উত্তরপ্রদেশের লোকেরা মধ্যপ্রদেশের চাকরি দখল করছেন।’’ আর এক জন আবার রসিকতা করেছেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের কমল নাথ মধ্যপ্রদেশের স্থানীয় কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছিনিয়ে নিয়েছেন।’’
কমল নাথের এই মন্তব্যে প্রবল অস্বস্তিতে কংগ্রেস। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের মতে, ‘‘এই মন্তব্য পুরোপুরি ভুল। আগে মহারাষ্ট্র, দিল্লি থেকে এমন কথা শোনা যেত। এ বার মধ্যপ্রদেশ থেকেও শোনা যাচ্ছে।’’ বিহার বিজেপির প্রেসিডেন্ট নিত্যানন্দ রাই বলেছেন, ‘‘ওঁর বিহার ও উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দাদের থেকে ক্ষমা চাওয়া উচিত। তবে গুজরাত থেকে বিহারিদের তাড়াতে উস্কানি দেওয়ার জন্য এখনও ক্ষমা চাননি কংগ্রেস বিধায়ক অল্পেশ ঠাকোর। এই দলের থেকে আর কী আশা করা যায়?’’ আরজেডির বিধায়ক ভাই বীরেন্দ্রর বক্তব্য, ‘‘দেশের সর্বত্র স্বাধীন ভাবে কাজ ও বাস করার অধিকার রয়েছে প্রত্যেক নাগরিকের।’’
কমল নাথের সমালোচনা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরের বক্তব্য, ‘‘ভূমিপুত্রদের কাজে অগ্রাধিকার দেওয়ার আইন ইতিমধ্যেই রয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘উনিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। ওঁর সেই আইনের কথা জানা উচিত। উনি মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।’’ বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের অভিযোগ, কমল নাথ বিভেদের রাজনীতি করছেন। এক রাজ্যের বিরুদ্ধে অন্য রাজ্যকে উস্কে দিচ্ছেন। মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘উনি কানপুরে জন্মেছেন। পশ্চিমবঙ্গে লেখাপড়া করেছেন। সারা দেশ জুড়ে ওঁর ব্যবসা। এখন উনি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। অতএব এই মন্তব্য ওঁর মুখে মানায় না।’’