চিত্রকূট বিজয়ের পর কংগ্রেস কর্মীদের উল্লাস। রবিবার।
বিজেপি’র ‘রাম রাজ্যে’ কংগ্রেসকে আশার আলো দেখাল রামেরই বনবাস আর তপস্যার স্থান! চিত্রকূট।
মধ্যপ্রদেশে বিজেপি’র ‘দুর্গ’-এ চিত্রকূট বিধানসভা আসনটি টানা চার বার কংগ্রেসের জিম্মাতেই থাকল। বিজেপি’র প্রার্থী শঙ্করলাল ত্রিপাঠিকে ১৪ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে চিত্রকূটে জয়ী হলেন কংগ্রেস প্রার্থী নীলান্ধু চতুর্বেদী।
টানা তিন বারের জেতা চিত্রকূট আসনটি এ বার কংগ্রেসের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে কোমর বেঁধে প্রচারে নেমেছিল শাসক দল বিজেপি। টানা তিন বারের বিধায়ক প্রেম সিংহের অকাল মৃত্যুতে আসনটিতে উপনির্বাচন হয়েছিল।মধ্যপ্রদেশে বিজেপি’র ‘গড়’-এ কংগ্রেসের ‘দুর্ভেদ্য দুর্গ’ বলে পরিচিত যে তিনটি আসন, তার অন্যতম চিত্রকূট। কংগ্রেসের অন্য দু’টি ঘাঁটি মুঙ্গাওলি ও কোলারাস। আগামী বছরের শেষাশেষি মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজের দুর্গ চিত্রকূটের মতো আসন রক্ষা করতে পারায় দৃশ্যতই খুশি কংগ্রেস শিবির।
আরও পড়ুন- মেয়েদের ঘর মুছতে, চাকি পিষতে বলছে রাজস্থান শিক্ষা দফতর
আরও পড়ুন- ‘মরার আগে পাকিস্তানটা দেখে যেতে চাই’
ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর তাঁর টুইটে কংগ্রেসের বিজয়ী প্রার্থী নীলান্ধু চতুর্বেদী লিখেছেন, ‘‘আমি ভোটারদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। চিত্রকূটের উন্নয়নে কোনও কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।’’
আর রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন সিংহের পুত্র অজয় সিংহ বলেছেন, ‘‘ভগবান রাম যেখানে তপস্যা করেছিলেন, সেখান থেকেই রাজ্যে কংগ্রেসের বনবাস পর্ব শেষ হল।’’ প্রায় ১২ বছর ধরে স্ত্রী সীতা ও ভাই লক্ষ্ণণকে নিয়ে এই চিত্রকূটেই বনবাস করেছিলেন রাম। তপস্যাও করেছিলেন।
অন্য দিকে, মূলত যাঁর দৌলতে টানা তিন বার চিত্রকূট বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হতে পেরেছিল কংগ্রেস, সেই বিধায়ক প্রেম সিংহের অকাল প্রয়াণে এ বার উৎসাহিত হয়ে উঠেছিল শাসক দল বিজেপি। রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্তত জনাছয়েক সদস্য বেশ কয়েক বার প্রচারে গিয়েছিলেন চিত্রকূটে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান তিন তিন বার প্রচারে গিয়েছিলেন চিত্রকূটে। ২৩টি জনসভা করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
শুধু তাই নয়, চিত্রকূট আসনটি কংগ্রেসের পকেট থেকে বের করে নিতে উত্তরপ্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য সহ বিভিন্ন রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিজেপি নেতা চিত্রকূটে গিয়েছিলেন প্রচারে। কংগ্রেসের ভোট কাড়বে বলে চিত্রকূট আসনের যে ১৬টি এলাকাকে বেছে নিয়েছিল বিজেপি, ভোটের ফলাফল বলছে, তার সবকটিতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল।
চিত্রকূট আসনটি দখলে রাখতে মরীয়া হয়ে উঠেছিল কংগ্রেসও। তাই কমলনাথের মতো প্রবীণ কংগ্রেস নেতাও এ বার প্রচারে গিয়েছিলেন চিত্রকূটে। যাঁকে সামনে রেখে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি’র বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে চলেছে কংগ্রেস, সেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো হাই প্রোফাইল নেতাকেও এ বার দেখা গিয়েছিল চিত্রকূট আসনের উপনির্বাচনের প্রচারে।
ডুয়েলে হার হল মধ্যপ্রদেশে গত তিন বারের শাসক দল বিজেপি’র।