‘জন কি বাতে’ দৈনিক খোঁচা কংগ্রেসের

‘মন কি বাত’-কে খোঁচা দিয়ে তার নাম রাখা হয়েছে ‘জন কি বাত’। আম জনতার কথা। শুক্রবার থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই কার্টুন সিরিজ চালু করেছে কংগ্রেস। নেতারা জানিয়েছেন, রোজ একটি করে কার্টুন প্রকাশ হবে। প্রথম দিনের কার্টুনের বিষয়— মোদীর ঘন ঘন বিদেশ সফর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৪
Share:

কংগ্রেসের ‘জন কি বাত’-এ শনিবারের কার্টুন।

প্রণব মুখোপাধ্যায় পাইপ টানা ছেড়ে দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছিলেন কার্টুনিস্টরা। ইন্দিরা-জমানায় অর্থমন্ত্রী প্রণবের ব্যঙ্গচিত্র তৈরির সময়ে মুখে পাইপ এঁকে দিলেই বোঝানো যেত, কার ছবি। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার অনেক পরেও প্রণবের কার্টুনে তাই পাইপ দেখা যেত।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে সেই সমস্যা নেই। সাদা চুল, সাদা দাড়ি, সরু ফ্রেমের চশমা, বিশেষ ধরনের কুর্তায় কার্টুনে তাঁকে চেনানো খুবই সহজ।

সেই সুযোগ নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের নতুন অস্ত্র— কার্টুন সিরিজ। ‘মন কি বাত’-কে খোঁচা দিয়ে তার নাম রাখা হয়েছে ‘জন কি বাত’। আম জনতার কথা। শুক্রবার থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই কার্টুন সিরিজ চালু করেছে কংগ্রেস। নেতারা জানিয়েছেন, রোজ একটি করে কার্টুন প্রকাশ হবে। প্রথম দিনের কার্টুনের বিষয়— মোদীর ঘন ঘন বিদেশ সফর। নানা দেশের স্টিকার আঁটা সুটকেস নিয়ে গালে হাত দিয়ে মোদী ভাবছেন, ‘আর একটা বিদেশ সফর হলেই হাফ-সেঞ্চুরি।’ শনিবারের কার্টুনে আবার মোদীর বিরুদ্ধে হাতিয়ার পেট্রোল-ডিজেল-রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি।

Advertisement

আরও পড়ুন: নোট-কয়েনের প্রণামী চলবে না এ মন্দিরে

ফেসবুক-টুইটারে কংগ্রেসের থেকে বিজেপি-আরএসএসের দাপট অনেক বেশি। কেউ সমালোচনা করলে পাল্টা আক্রমণ করতে এই ‘ট্রোল-বাহিনী’র জুড়ি নেই। রাহুল গাঁধী সম্প্রতি কন্নড় অভিনেত্রী রাম্যা ওরফে দিব্যা স্পন্দনাকে কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া-ডিজিটাল কমিউনিকেশন দফতরের দায়িত্ব দিয়েছেন। দিব্যার যুক্তি, ‘‘রোজ একটা করে ‘জন কি বাত’ বিজেপিকে সামলাতে কাজে দেবে।’’

নেতারা জানাচ্ছেন, এই কার্টুন সিরিজের পিছনে আসল অনুপ্রেরণা হল, সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজরাত কংগ্রেসের প্রচার। মোদীর রাজ্যে তাঁরই ‘বিকাশ’ তথা উন্নয়নের মন্ত্রকে কটাক্ষ করে ফেসবুক-টুইটারে কংগ্রেস প্রচার শুরু করেছে— ‘বিকাশ গান্ডো থয়ো ছে।’ গুজরাতি থেকে বাংলা করলে যার মানে হয়, ‘বিকাশ পাগলা হয়ে গিয়েছে!’ রাস্তায় খানাখন্দ, জমা জল, জাতীয় সড়ক বসে গিয়ে তাতে ট্রাক ঢুকে যাওয়া— এমন নানা ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ছবিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীও। উক্তির ঢঙেই তাঁর পাশে লেখা, ‘বিকাশ গান্ডো থয়ো ছে।’ বাদ যায়নি বুলেট ট্রেনও। কার্টুনে দেখা যাচ্ছে, গরুর পাল রাস্তা জুড়ে বসে রয়েছে বলে বুলেট ট্রেনের লাইন ঘুরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এতে কি রাজনৈতিক লাভ হবে? কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, গুজরাতে তাঁদের খোঁচার জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী, রাজ্য বিজেপির সভাপতি জিতু ভাগনানিকে মুখ খুলতে হয়েছে। রূপাণী-ভাগনানি যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘বিজেপি আর বিকাশ এখন সমার্থক। মানুষ সমালোচনা করছেন ঠিকই। কিন্তু বিকাশের মাথা খারাপ হয়েছে বললেও, দারিদ্র, বেকারত্ব, এই সব সমস্যারই সমাধান হয়েছে।’’

কংগ্রেস নেতাদের দাবি, এ বার একই ভাবে ‘মন কি বাত’ ছেড়ে ‘জন কি বাত’-এ নজর দিতে হবে খোদ নরেন্দ্র মোদীকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement