প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। ফাইল চিত্র।
হিমাচল প্রদেশে বিজেপিকে সরিয়ে ক্ষমতা দখলের পরেও গুজরাতে কংগ্রেসের ব্যর্থতা নিয়ে চর্চা জারি রাজনৈতিক শিবিরে। এ বার হিমাচল, গুজরাত ও দিল্লির সাম্প্রতিক ভোটের ফলাফল নিয়ে মুখ খুললেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। তিনি জানিয়েছেন, গুজরাতে কংগ্রেসের হার থেকে শিক্ষা নিতে হবে কংগ্রেসকে। গুজরাতে ভোটের প্রচার শুরুর পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল কংগ্রেসের নির্বাচনী কৌশল নিয়ে। সেখানে সে ভাবে কংগ্রেসের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়নি বলে আলোচনা চলছিল রাজনৈতিক মহলে। যদিও গুজরাতে কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রঘু শর্মা বার বার জানিয়েছেন, নীরব প্রচারে গুরুত্ব দিচ্ছে কংগ্রেস।
চিদম্বরম অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছেন, যুযুধান ভোটযুদ্ধে নীরব প্রচারের কোনও জায়গা নেই। এই কৌশলের সঙ্গে তিনি সহমত নন। কংগ্রেসের উচিত ছিল, ভোটের জন্য তাদের মানব সম্পদের যথাযোগ্য ব্যবহার করা। এর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, আগামী লোকসভার আগে কংগ্রেসকে কেন্দ্র করেই বিজেপি বিরোধী জোট গড়ে উঠবে। বিরোধী ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিরোধী ঐক্য সবসময়েই কঠিন ছিল। এ প্রসঙ্গে ১৯৭৭ ও ১৯৮৯ সালের পরিস্থিতিরও প্রসঙ্গে তুলে ধরেছেন তিনি।
উঠে এসেছে আপের প্রসঙ্গও। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিদম্বরম জানিয়েছেন, দিল্লির বাইরে পঞ্জাব ও হরিয়ানা ছাড়া কোথাও আপের কোনও অস্তিত্ব নেই। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর মতে, গুজরাতে আপ স্রেফ ভোট কেটেছে। যেমনটা দেখা গিয়েছিল উত্তরাখণ্ড, গোয়ায়। বিজেপি-বিরোধী পরিসরে আপ কংগ্রেসের জায়গা ক্রমশ দখল করছে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে চিদম্বরম জানিয়েছেন, গুজরাতে ১৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে আপ। তাদের জন্য ৩৩টি আসনে কংগ্রেসের জয়ের আশা নষ্ট হয়েছে।
তিন জায়গার সাম্প্রতিক নির্বাচন নিয়ে চিদম্বরম মনে করেন, গুজরাতে বিজেপি জিতলেও হিমাচল প্রদেশ ও দিল্লির পুর নির্বাচনে হেরে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বোঝা উচিত যে, তিন জায়গাতেই বিজেপি ক্ষমতায় থাকলেও দু’টি জায়গায় ক্ষমতা খুইয়েছে তারা। চিদম্বরমের মন্তব্য, “এটা বিজেপির পক্ষে এক বিরাট ধাক্কা।” এর পাশাপাশি ভোটের ব্যবধান নিয়েও মতামত জানিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হিমাচলের হারের পরে জানিয়েছিলেন, মাত্র ০.৯ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে পরাজয় হয়েছে। চিদম্বরম এ প্রসঙ্গে জানান, হিমাচলের ভোটের মার্জিন কম থাকলেও এ দেশের নির্বাচনী পদ্ধতি অনুযায়ী কেন্দ্রভিত্তিক ব্যবস্থায় কংগ্রেস ৪০টি আসনে জিতেছে।যা বিজেপির চেয়ে অনেকটাই বেশি (২৫)।
ভারত জোড়ো যাত্রা প্রসঙ্গে চিদম্বরম জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়েই রাহুল গান্ধীর এই পদযাত্রা। এর ফলে কংগ্রেস কর্মীরা উজ্জীবিত হবেন। গরিব, যুব বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে কংগ্রেস নিয়ে আগ্রহ আরও বাড়বে বলেই মনে করেন এই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা।