The Accidental Prime Minister

ভোটের আগে মনমোহনকে নিয়ে ছবি, ফুঁসছে কংগ্রেস, প্রদর্শন বন্ধের হুমকি

২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত, টানা দশ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিংহ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৫:০২
Share:

ছবিতে মনমোহন সিংহের ভূমিকায় অনুপম খের।

‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ ছবির ট্রেলরপ্রকাশ পেতেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বিজেপি যেমন একে প্রচারের হাতিয়ার করেছে, তেমনই ছবির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে কংগ্রেস। এমনকি, সদ্য দখলে আসা মধ্যপ্রদেশে ছবিটি নিষিদ্ধ করা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রয়োজনীয় কাটছাঁট না করলে মহারাষ্ট্রে ছবির প্রদর্শন করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

ছবিতে তথ্য বিকৃত করার অভিযোগ তুলেছেন একাধিক কংগ্রেস নেতা। দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা ছবিটিকে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচারের হাতিয়ার বলে উল্লেখ করেছেন। মুক্তি পাওয়ার আগে ছবিটি তাঁদের দেখাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাটছাঁট করতে হবে বলে দাবি তুলেছেন মহারাষ্ট্র যুব কংগ্রেসের সভাপতি সত্যজিত্ তাম্বে পাটিলও। নইলে প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও তুলেছেন। তবে যাঁকে কেন্দ্র করে এত বিতর্ক, সেই মনমোহন সিংহ এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে তাঁর মতামত চাওয়া হলে, মাইক রেখে দূরে সরে যান তিনি। এড়িয়ে যান সেই সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্ন।

তাঁর হয়ে অবশ্য এগিয়ে এসেছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। ছবিটি নিয়ে কংগ্রেসের অবস্থানে সমালোচনা করে নিজের টুইটারে হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘‘কংগ্রেস, তাদের শাখা সংগঠন এবং মনমোহন সিংহের শুভাকাঙ্খীরা ছবিটি নিয়ে আপত্তি তুলছেন বটে। কিন্তু তাঁদের অবস্থানেই গলদ রয়েছে। একদিকে অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন, আবার ছবির প্রদর্শনী বন্ধ করার হুমকিও দিচ্ছেন। এত ঝামেলার দরকার কী? মনমোহন সিংহের কৃতিত্ব এবং উত্তরাধিকার শুধুমাত্র একটা বই লিখে বা ছবি বানিয়ে বেঁধে ফেলা সম্ভব নয়।’’

Advertisement

ওমর আবদুল্লার টুইট।

আরও পড়ুন: মনমোহনের ভূমিকায় অনুপম, প্রকাশিত ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’-এর ট্রেলার

২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত, টানা দশ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিংহ। পরবর্তীকালে তাঁকে নিয়ে ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ বই লেখেন সঞ্জয় বারু, একসময় যিনি মনমোহন সিংহের পরামর্শদাতা ছিলেন। তাতে তৎকালীন সরকারে মনমোহন সিংহের অবস্থান, তাঁর সরকারের উপর সনিয়া গাঁধীর প্রভাব এবং একাধিক দুর্নীতি সহ নানা ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। সেই বইটি নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ ছবিটি। তাতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন অনুপম খের। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার ট্রেলর। আর তাতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।

সদ্য সমাপ্ত পাঁচ রাজ্য নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে বিজেপি। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া তারা। আর তাতে সদ্য মুক্তি পাওয়া ট্রেলরটিকে ইতিমধ্যেই হাতিয়ার করে ফেলেছে তারা। নিজেদের টুইটার হ্যান্ডলে ছবিটিকে ইতিমধ্যেই দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছে বিজেপি। তাতে বলা হয়, ‘‘কী ভাবে একটি পরিবার টানা দশ বছর ধরে দেশকে বাজি রেখে ফায়দা তুলে গিয়েছে, তারই গল্প এই ছবি। মনমোহন সিংহ কি তাহলে নামমাত্র শাসক ছিলেন, গাঁধী পরিবারের উত্তরাধিকার যোগ্য না হয়ে ওঠা পর্যন্ত যিনি কুর্সি সামলাচ্ছিলেন?’’

বিজেপির টুইট।

আরও পড়ুন: হামলার জের, এক্স ক্যাটেগরি নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে বিজেপির জয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে​

ছবিটিকে যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে ব্যবহার করা হতে পারে, সেই যুক্তি উড়িয়ে দেননি ছবির মুখ্য অভিনেতা অনুপম খেরও, যাঁর স্ত্রী কিরণ খের আবার বিজেপি সাংসদ। বরং তাতে বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই তাঁর। ট্রেলর প্রকাশের সময় নিজে মুখেই সে কথা জানান অনুপম। তাঁর যুক্তি, তিনি রাজনীতিক নন। লোকসভা ভোটের প্রচারে ছবিটিকে ব্যবহার করা হবে কি না, তা বিজেপি-ই ঠিক করবে। এতে কোনও সমস্যাও চোখে পড়েনি তাঁর। বরং তাঁর কথায়, স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবসের সময় গুচ্ছের দেশভক্তির ছবি মুক্তি পায়। তাহলে ভোটের আগে এই ছবির মুক্তিতে সমস্যা কোথায়?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement