রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
বিমানের যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে আজ মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ অঞ্চলের চিখলিতে পূর্বনির্ধারিত নির্বাচনী সভা করতে পারলেন না রাহুল গান্ধী। দুপুরে ভিডিয়ো মাধ্যমে দুঃখপ্রকাশ করে বিকেলে দ্বিতীয়টিতে (গোন্দিয়া) সশরীরে হাজির হয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করলেন তিনি। তাঁর দাবি, কংগ্রেস জাতগণনার কথা বলায় মোদী সন্ত্রস্ত হয়ে তাঁদের জাতপাতের প্রশ্নে প্রতি আক্রমণ করেচলেছেন। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুলের বক্তব্য, “মোদী নিজে ওবিসি তাস খেলেন, নিজেকে ওবিসি হিসেবে তুলে ধরে সেই সম্প্রদায়ের আবেগ তৈরি করেন ভোটব্যাঙ্কের জন্য। কিন্তু দেশের সম্পদের মাত্র ৫ শতাংশ তাঁদের জন্য খরচ করা হয়।”
আগামী ২০ তারিখ মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট। রাহুল আবার ওই রাজ্যে ১৪ এবং ১৬ তারিখ কয়েকটি জনসভা করবেন। আজ তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী দাবি, তিন কৃষি আইন তিনি এনেছিলেন কৃষকদের সুবিধা জন্য। ওই কালা আইনগুলি যদি সত্যিই তাঁদের উপকারেই আসবে, তা হলে কৃষকরা রাস্তায় নেমেছিলেন কেন? আসলে তিনি দেশের কতিপয় ধনী শিল্পকর্তার ঋণ মকুব করতে চেয়েছেন, কৃষকদের নয়।” এই প্রসঙ্গে বাছাই করা শিল্পপতিদের ১৬ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক ঋণ কেন্দ্র মকুব করেছে বলে অভিযোগ রাহুলের। তাঁর কথায়, “সয়াবিন, তুলো, ধান চাষিদের ফসলের যোগ্য দাম দিতে পারেন না নরেন্দ্র মোদী, অথচ বন্ধু শিল্পপতিদের সঙ্গে ওঠাবসা করেন।”
শনিবার প্রকাশিত হয়েছে মহারাষ্ট্রের বিরোধী জোট মহাবিকাশ আঘাড়ীর ইস্তাহার। তা নিয়ে রাহুলের প্রতিশ্রুতি, ক্ষমতায় এলে ওই তিনটি ফসলেরই যোগ্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়া হবে, সঙ্গে বাড়তি সুবিধাও।
মহারাষ্ট্রে ভোটপ্রচারে প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে অভিযোগ করেছেন, কংগ্রেস সংবিধান এবং সংরক্ষণকে ধ্বংস করতে চায়। আজ রাহুলের পাল্টা, “গত হাজার বছর ধরে গৌতম বুদ্ধ, সন্ত বাসবেশ্বের, ছত্রপতি শিবাজি, মহাত্মা জ্যোতিরাও ফুলে, মহাত্মা গান্ধী, বাবাসাহেব অম্বেডকরের মতো মানুষদের সম্মিলিত প্রজ্ঞার ফলাফলে যে সংবিধান তৈরি হয়েছে, তাকে বদলে দেওয়ার জন্য অহোরাত্র চেষ্টা করেছে মোদী সরকার।’’ লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী যখন ‘৪০০ পার’-এর স্লোগান দিয়েছিলেন, তখন এই ভাষ্যটিকে সফল ভাবে মহারাষ্ট্রের গ্রাম-শহরে ছড়িয়ে দিতে পেরেছিল কংগ্রেস। তার পাঁচ মাস পরে এ বারেও সেই চেষ্টা ধরে রেখেছেন রাহুল। তাঁর কথায়, “সংবিধান সাম্য, সব ধর্মের এবং মানুষকে সম্মান করতে শেখায়। বিজেপি এবং আরএসএস-র লক্ষ্য তাকে শেষ করা। সংবিধানে কোথাও মানুষকে হত্যা করার কথা নেই, গরিবকে পীড়নের বার্তা নেই। কিন্তু যখন লাল রংয়ের সংবিধান দেখানো হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী তার সমালোচনা করছেন। আসলে তিনি সংবিধান পড়েননি।”