প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। ছবি: পিটিআই
কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচ প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাজিমাত করার পরে এ বার মধ্যপ্রদেশেও একই কৌশল নিল কংগ্রেস। খোদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা আজ মধ্যপ্রদেশের জবলপুর থেকে ভোটের প্রচার শুরু করে ঘোষণা করেছেন, হিন্দি বলয়ের এই রাজ্যে বিজেপিকে সরিয়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কর্নাটকের মতোই পাঁচ প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হবে।
কী সেই পাঁচ প্রতিশ্রুতি? এক, মহিলাদের জন্য মাসে দেড় হাজার টাকা ভাতা। দুই, ৫০০ টাকার রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার। তিন, একশো ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং দু’শো ইউনিট পর্যন্ত অর্ধেক দামে বিদ্যুৎ। চার, পুরনো পেনশন প্রকল্প চালু করা এবং পাঁচ, নতুন করে কৃষকদের ঋণ মকুব শুরু করা।
কর্নাটকের মতোই মধ্যপ্রদেশে এই পাঁচ প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে হাতিয়ার করতে চাইছে কংগ্রেস। প্রিয়ঙ্কা আজ জবলপুরের জনসভায় অভিযোগ তুলেছেন, মধ্যপ্রদেশে বিজেপি সরকার গত ২২০ মাসে ২২৫টি দুর্নীতি করেছে। তিন বছরে মাত্র ২১ জনের চাকরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অন্য সব রাজ্যের মতো কর্নাটকে গিয়েও নালিশ করেছিলেন, তাঁকে গালিগালাজ করা হচ্ছে। মধ্যপ্রদেশে মোদীর প্রচার শুরুর আগেই আজ প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রীকে যত গালি দেওয়া হয় বলে তিনি দাবি করেন, তার থেকে বিজেপির দুর্নীতির তালিকা অনেক বেশি লম্বা।”
কর্নাটকে কংগ্রেসের পাঁচ প্রতিশ্রুতি ছিল, বিনামূল্যে দু’শো ইউনিট বিদ্যুৎ, মহিলাদের দু’হাজার টাকা ভাতা, দরিদ্র পরিবারের জন্য দশ কেজি খাদ্যশস্য, বেকারদের জন্য মাসিক ভাতা ও বাসে মহিলাদের নিখরচায় যাত্রা। কর্নাটকে বিজেপির হারের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নীতি আয়োগের বৈঠকে বলেছিলেন, জনমোহিনী রাজনীতি করে মানুষের মন জয় করতে গিয়ে রাজ্যের কোষাগারের যাতে দেউলিয়া দশা না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কিন্তু কর্নাটকের পরে মধ্যপ্রদেশেও বিজেপিকে সরাতে মরিয়া কংগ্রেস নভেম্বরে ভোটের পাঁচ মাস আগে থেকে পাঁচ প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছে।
কর্নাটকে জয়ের পরে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, মধ্যপ্রদেশের ২৩০ আসনের বিধানসভায় ১৫০টি আসন জিতে ক্ষমতায় আসবে। প্রিয়ঙ্কা আজ সেই লক্ষ্যে মধ্যপ্রদেশের আদিবাসী অধ্যুষিত জবলপুর অঞ্চল থেকে প্রচার শুরু করেছেন। রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রা মধ্যপ্রদেশের এই এলাকা দিয়ে যায়নি। জবলপুরের জনসভার আগে নর্মদার পুজো করেছেন তিনি। বিজেপি প্রিয়ঙ্কাকে ‘নির্বাচনী হিন্দু’ বলে কটাক্ষও করেছে।
পাঁচ বছর আগে কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশে জিতে কমল নাথের নেতৃত্বে সরকার গড়েছিল। কিন্তু দু’বছর পরে অনুগামী বিধায়কদের নিয়ে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় কমল নাথ সরকারের পতন হয়। তার আগে পর্যন্ত প্রিয়ঙ্কা ও সিন্ধিয়া একই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে ছিলেন। কৌতূহল ছিল, প্রিয়ঙ্কা সিন্ধিয়া সম্পর্কে কী বলেন? প্রিয়ঙ্কা সিন্ধিয়ার নাম না করলেও মন্তব্য করেছেন, ‘‘মধ্যপ্রদেশের কিছু নেতা ক্ষমতার লোভে কংগ্রেসের মতাদর্শ ত্যাগ করেছেন।’’