Nishikant Dubey

নিশিকান্তে নীরব কেন প্রধানমন্ত্রী, প্রশ্ন কংগ্রেসের

কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের প্রশ্ন, কেন এ নিয়ে নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? তাঁর নীরবতা কি ওই দুই সাংসদের প্রতি সমর্থন জোগানো নয়?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৪৩
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বিচারব্যবস্থা ও প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ করে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে ও দীনেশ শর্মার করা মন্তব্যের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই বলে গত কালই দায় ঝেড়ে ফেলেছিলেন বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা। দলের পক্ষ থেকে আজ ফের বলা হয়েছে, দল কোনও ভাবেই ওই ধরনের মন্তব্যকে সমর্থন করে না। দলের অন্য নেতাদের বিচারব্যবস্থা নিয়ে মন্তব্যে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের প্রশ্ন, কেন এ নিয়ে নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? তাঁর নীরবতা কি ওই দুই সাংসদের প্রতি সমর্থন জোগানো নয়? উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে যে তির্যক মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে সরকারের অবস্থান কী?

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে অনুমোদন দিতে হবে বলে রায় দিয়েছিল। যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে ‘সুপার পার্লামেন্ট’ আখ্যা দিয়ে প্রথমে উপরাষ্ট্রপতি বলেছিলেন, সংবিধানের ১৪২তম অনুচ্ছেদে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ ক্ষমতা পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের সমান হয়ে উঠেছে। তার পরে নিশিকান্ত দুবে সুপ্রিম কোর্টকে নিশানা করে বলেন, ‘‘আপনাদের নিয়োগ করেছেন যাঁরা, আপনারা তাঁদের কী ভাবে নির্দেশ দিতে পারেন?’’ দীনেশ বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতিই ‘সুপ্রিম’, তাঁকে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারে না।’’ এর পরেই কাল এক্স হ্যান্ডলে নড্ডা লেখেন, ‘‘বিচারব্যবস্থা এবং প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ করে নিশিকান্ত দুবে এবং দীনেশ শর্মা যে সব মন্তব্য করেছেন, তার সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। এ তাঁদের ব্যক্তিগত মন্তব্য। বিজেপি তাঁদের সঙ্গে একমত নয় এবং তারা কখনও এই ধরনের মন্তব্য সমর্থনও করেনি। বিজেপি সর্বতো ভাবে এই মন্তব্য খারিজ করছে।’’

বিজেপি সভাপতির এই দায় ঝেড়ে ফেলার কৌশল নিয়েই আজ প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম। তাঁর কথায়, ‘‘ওই দুই সাংসদ ধারাবাহিক ভাবে ঘৃণাভাষণ দিয়ে থাকেন। কোনও গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে আক্রমণ করতে ওই দুই নেতাকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিদায়ী বিজেপি সভাপতি এ প্রসঙ্গে যে বক্তব্য রেখেছেন, তা ক্ষত মেরামতি ছাড়া কিছু নয়। ওই ধরনের কথা বলে কাউকে বোকা বানানো যাবে না। এটি একটি রাজনৈতিক কপটতা।’’

একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কেন দুই সাংসদ ও উপরাষ্ট্রপতির মতো শীর্ষ সাংবিধানিক পদে বসে থাকা ব্যক্তির মন্তব্যের সমালোচনায় নীরব, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন জয়রাম। তাঁর কথায়, ‘‘সংবিধানের উপর ধারাবাহিক আঘাত আসা সত্ত্বেও যে ভাবে প্রধানমন্ত্রী নীরব, তা কি কৌশলগত ভাবে দুই সাংসদের পাশে দাঁড়ানো নয়?’’ তাঁর প্রশ্ন, কেন ওই দুই সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল না বিজেপি? কেন নড্ডা ওই দুই সাংসদকে এখনও কারণ দর্শানোর নির্দেশ পাঠাননি?

কংগ্রেসের মতে, নড্ডা দায়সারা মন্তব্য করে আসলে ওই দুই সাংসদকে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। বিচারব্যবস্থার অবমাননা করা সত্ত্বেও বিজেপি দোষীদের বাঁচাতে তৎপর হয়ে উঠেছে।

কেবল বিরোধীরাই নয়, বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন আইনজীবীদের একাংশও। ওয়াকফ আইন মামলার অন্যতম মামলাকারী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আনাস তানভীরের দাবি, শীর্ষ আদালতের মর্যাদা হ্রাস করার লক্ষ্যে বিজেপি সাংসদ ওই মন্তব্য করেছেন। তাই অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমণিকে চিঠি লিখে নিশিকান্তর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা শুরু করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। অ্যাটর্নি জেনারেলকে লেখা চিঠিতে তানভীর লিখেছেন, নিশিকান্ত প্রকাশ্যে যে বিবৃতি দিয়েছেন তা অত্যন্ত কলঙ্কজনক, বিভ্রান্তিকর। সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা ও কর্তৃত্বকে হ্রাস করার লক্ষ্যে ওই মন্তব্য করা হয়েছে। যা অবমাননাকর এবং বিপজ্জনক ভাবে উস্কানিমূলক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন