সংবিধান হাতে অধীর চৌধুরী, রাহুল গান্ধীদের নয়া সংসগ ভবনের দিকে যাত্রা। ছবি: পিটিআই।
শাসক এবং বিরোধী দু’পক্ষই আজ ‘বাসাবদল’ করল, তবে ভিন্ন কায়দায়। পুরনো থেকে নতুন সংসদে যাওয়ার পথটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দেখা গেল রাজকীয় শোভাযাত্রা। অন্য দিকে, কংগ্রেসের সাংসদরা আলাদা করে পৌঁছলেন নতুন ভবনে। কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, অধীর চৌধুরীদের সংবিধানকে মাথার উপর তুলে, মন্দ লয়ে মিছিল করে পুরনো ভবনের মূল ফটক থেকে নতুন ভবনের সিংহদ্বার পর্যন্ত (২০০ মিটার) যাওয়াকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল।
কংগ্রেস সাংসদ কে সি বেণুগোপালের কথায়, “আমরা সংবিধানকে মাথায় নিয়ে নতুন সংসদ ভবনে ঢুকেছি। সংসদীয় গণতন্ত্রকে সংবিধানই পারে বাঁচাতে। নতুন ভবনকে স্বাগত জানাই। কিন্তু স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের এই পীঠস্থানকে ধরে রাখতেই হবে ভারতের প্রকৃত স্বরকে বাঁচিয়ে রাখতে।”
ডিএমকে-র টি আর বালু, কানিমোজি, কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ, কে সি বেণুগোপালদের দেখা গেল একসঙ্গে নতুন ভবনে যেতে। তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়-সহ দুই কক্ষের সাংসদরা প্রথমে মিলিত হন সংসদের পুরনো ভবনে তাঁদের দলীয় অফিসে। সেখান থেকে তাঁরা একসঙ্গে যান নতুন ভবনে।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, গণেশ চতুর্থীর দিনটিকে পূর্বপরিকল্পনা মাফিক বেছে নিয়েছিল মোদী সরকার নতুন ভবনে প্রবেশ করার জন্য নিজেদের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই। আজ সেন্ট্রাল হলে প্রারম্ভিক বক্তৃতায় মোদী বলেন, “আজকে আমরা নতুন ভারতের শ্রীগণেশ (শুভ সূচনা) করতে চলেছি।” সকালের বক্তৃতা পর্ব শেষ করে মোদী চলে আসেন পুরনো ভবনে তাঁর কক্ষে। বাইরে ভিড় জমাতে থাকেন এস জয়শঙ্কর, স্মৃতি ইরানি, পীযূষ গয়াল, প্রহ্লাদ জোশীর মতো মন্ত্রী এবং সাংসদেরা। তার আগে কার্যত প্রধানমন্ত্রীর ঘরের দরজা থেকে নতুন ভবনের ফটক পর্যন্ত লাল কার্পেট বিছিয়ে দু’দিক সোনালি শিকল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। ওই পথ ধরে ‘মোদী, মোদী’ ধ্বনি দিতে দিতে নতুন ভবনে পৌঁছে যায় শাসক দল। মোদী হাত নাড়েন পরিচিত ভঙ্গিতে। তার একটু পরেই সংবিধান হাতে নিয়ে, রাহুল গান্ধীকে পাশে রেখে অধীর চৌধুরী মিছিল করে কংগ্রেসের সাংসদদের নিয়ে যান নতুন ভবনে।
আজই সেন্ট্রাল হলের বক্তৃতায় মোদী প্রস্তাব দেন, পুরনো ভবনের নাম সংবিধান সদন রাখতে। তিনি বলেন, “পুরনো সংসদ ভবনের গরিমা যেন ম্লান না হয়। তাকে শুধুমাত্র পুরনো সংসদ ভবন হিসাবে উল্লেখ করলে চলবে না। এর নাম রাখা হোক সংবিধান সদন।” একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন ভবনের নাম রাখা হয় সংসদ ভবন এবং পুরনো ভবনের নাম সংবিধান সদন। লোকসভার অধিবেশন বসলে স্পিকার ওম বিড়লা তা পড়েও শোনান।
আজ সকালে লোকসভা এবং রাজ্যসভার সমস্ত সাংসদদের একত্রে ছবি তোলা হয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক
ও’ব্রায়েন, জয়রাম রমেশের মতো সাংসদ তাতে যোগ দেননি। যোগ না দেওয়ার কোনও নির্দিষ্ট কারণও অবশ্য দেখানো হয়নি।