সংসদ ভবন।- ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের দেখানো পথেই হাঁটল কংগ্রেস।
দেশজুড়ে পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি) আনুষ্ঠানিক ভাবে চালুর জন্য শুক্রবার মধ্যরাতে সংসদের সেন্ট্রাল হলে বিশেষ অধিবেশন বয়কট করছে কংগ্রেস। ওই অধিবেশন বয়কটের কথা বুধবারই তাঁর ফেসবুক পোস্টে জানিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই অধিবেশন বয়কটের জন্য তৃণমূল যে যুক্তি দেখিয়েছে, সেই একই যুক্তি কংগ্রেসেরও। কংগ্রেসও জানিয়েছে, এত তাড়াহুড়ো করে জিএসটি চালু করা উচিত হচ্ছে না। আগামী কাল রাত ১১টা থেকে সংসদের সেন্ট্রাল হলে শুরু হচ্ছে মধ্যরাতের ওই বিশেষ অধিবেশন। রাত ১২টায় প্রধানমন্ত্রী মোদী আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু করবেন জিএসটি। তার পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ।
তৃণমূল আর কংগ্রেসের পথের শরিক হচ্ছে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) ও অখিলেশ সিংহ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (এসপি)’র মতো বিরোধী দলগুলিও। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ওই অধিবেশনে হাজির না থাকার ইঙ্গিত দিলেও জানিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠান বয়কট করার জন্য বাম দলগুলি তাঁদের সাংসদদের সরকারি ভাবে কোনও নির্দেশ দেবে না। সংসদের ওই বিশেষ অধিবেশনে হাজির থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও জনতা দল (ধর্মনিরপেক্ষ) নেতা এইচডি দেবেগৌড়াকে। কিন্তু তাঁর দল কংগ্রেস অধিবেশন বয়কট করছে বলে শুক্রবার সংসদের সেন্ট্রাল হলে হাজির থাকছেন না মনমোহন। তবে আরেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবেগৌড়া থাকবেন ওই অনুষ্ঠানে।
আরও পড়ুন- গো-ভক্তির নামে মানুষ খুন কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না: প্রধানমন্ত্রী
ঘটনা হল, শাসক দল বিজেপি যাকে দেশের কর ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় সংস্কার বলে দাবি করছে, আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই জিএসটি চালুর অনুষ্ঠানেই হাজির থাকছেন না ’৯০-এর দশকে ভারতে অর্থনৈতিক সংস্কার শুরুর মূল কাণ্ডারী, তদানীন্তন অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
সংসদের ওই বিশেষ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় হাজির থাকা সত্ত্বেও কেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জিএসটি চালু করছেন আনুষ্ঠানিক ভাবে, গতকালই তা নিয়ে কংগ্রেসের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জমানায় তদানীন্তন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ই প্রথম আলোচনার জন্য জিএসটি বিল পেশ করেছিলেন সংসদে।
খুব তাড়াহুড়ো করে সারা দেশে জিএসটি চালুর মাধ্যমে শাসক দল রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছে বলে বিরোধীরা যে অভিযোগ করেছেন, তা অবশ্য মানতে চাননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর কথায়, ‘‘আনুষ্ঠানিক ভাবে সারা দেসে জিএসটি চালুর সিদ্ধান্ত সবক’টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সর্বসম্মতিতেই নেওয়া হয়েছে। এমনকী, তা যে জুলাইয়ের এক তারিখেই আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু করা হবে, সেই সিদ্ধান্তেও সায় ছিল সকলেরই।’’