রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী দলগুলির প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে এক মঞ্চে এল কংগ্রেস, বাম ও জনতা পরিবারের দলগুলি। এই মঞ্চ থেকেই লোকসভা ভোটের আগে জাতীয় স্তরে সব বিরোধী দলের মহাজোট তৈরি করার কাজ শুরু করতে চাইছে তারা। সোমবার ‘প্রগতিশীল দলগুলির ঐক্য’-র ব্যানারে সভার আয়োজন করেছিল জেডিইউ। কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি থেকে জেডিইউ-র শরদ যাদব এক সুরে জানিয়ে দিয়েছেন, সব ধর্মনিরপেক্ষ দলকেই একজোট হতে হবে। এই জোটের প্রথম পরীক্ষা রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। শরদ যাদবের মতে, শুধু জাতীয় স্তরে নয়, রাজ্যে রাজ্যেও এই জোট দরকার। উত্তরপ্রদেশ বা দিল্লির পুরভোটে এই বিরোধী দলগুলির জোট হয়নি বলেই বিজেপি জিতে গিয়েছে।
লালুপ্রসাদও আজ পটনায় জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ওড়িশার নবীন পট্টনায়েক এবং নীতীশ কুমারকে এক মঞ্চে আনতে চাইছেন তিনি। আজ নালন্দা জেলায় রাজগীরের আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে দলীয় প্রশিক্ষণ শিবিরের উদ্বোধনে এ কথা বলেন আরজেডি সভাপতি। দু’দিন ধরে দলীয় নেতাদের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করেছে বিহারের অন্যতম শাসক দল। সেই শিবির থেকেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন লালুপ্রসাদ। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মতে, বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে হটাতে গেলে সকলের একসঙ্গে আসা জরুরি। তিনি বলেন, ‘‘২০১৪ সালে আমি ও নীতীশ আলাদা আলাদা লড়েছিলাম। তার জন্য বিজেপি জিতেছিল। ২০১৯ সালে সেই ভুল করা যাবে না। সকলকে একসঙ্গে এসে বিজেপির মোকাবিলা করতে হবে।’’ সব বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে এক মঞ্চে আনতে তিনি কাজ করছেন বলেও জানিয়েছেন লালু। রাজনীতিকদের মতে, সম্প্রতি বিজেপি নেতা সুশীল মোদীর তোলা মাটি, শপিংমল ও জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগ নিয়ে কিছুটা চাপে রয়েছেন লালু। দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যেও লালুপ্রসাদের ‘বেনামি’ সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা রয়েছে। সেই চাপ কাটাতে তাড়াতাড়ি দু’দিনের দলীয় প্রশিক্ষণ শিবির এবং পরে এক দিনের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক ডেকেছেন আরজেডি প্রধান। রাবড়িদেবী, তেজস্বী যাদব, তেজপ্রতাপ যাদব, মিসা ভারতীকে এক মঞ্চে এনে পরিবারের ঐক্য প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন।
পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধে সব বিরোধী দলকে এক হতে হবে বলে নেতাদের চাঙ্গা করতে চেয়েছেন আরজেডি প্রধান। দলীয় প্রশিক্ষণ শিবিরের প্রথম দিন বিজেপির বিরুদ্ধে রণকৌশল তৈরি করেই কাটান লালু। তাঁর মতে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রশিক্ষণ নেওয়া জরুরি। নির্বাচনের সময়ে তা কাজে লাগে। কর্মিসভায় সাংসদ, বিধায়ক, জেলা সভাপতি-সহ প্রায় হাজার খানেক নেতা হাজির হয়েছেন।