‘রহস্যময়’ ডায়েরি নিয়ে কংগ্রেসকে পাল্টা আক্রমণ করলেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। সেইসঙ্গে রাহুল গাঁধী ও সংবাদমাধ্যমকে নিশানা করলেন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
গত কাল কংগ্রেস দাবি করে, আয়কর দফতরের কাছে বি এস ইয়েদুরাপ্পার একটি ডায়েরি রয়েছে। তাতে বিজেপির ‘কেন্দ্রীয় কমিটি’, বিচারক, আইনজীবীদের মোট ১৮০০ কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তাই মোদীকেও নিশানা করে কংগ্রেস। এর পরেই বিজেপির তরফে তৎপরতা শুরু হয়। আয়কর দফতর বিবৃতি দিয়ে জানায়, ২০১৭ সালে কংগ্রেস নেতা ডি শিবকুমারের বিরুদ্ধে আয়কর হানা হয়। তিনিই ওই ডায়েরির খোলা পাতার প্রতিলিপি দেন। দাবি করেন হাতের লেখা ইয়েদুরাপ্পার। আসল পাতা দিতে পারেননি শিবকুমার। তাই হাতের লেখা যাচাই করা যায়নি। আয়করের এই বিবৃতি পড়ে শুনিয়ে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘পর্বতের মূষিক প্রসবও হল না।’’
আজ দু’টি পাতার ছবি টুইট করেছেন ইয়েদুরাপ্পা। তার একটিতে দেখা যাচ্ছে, নিতিন গডকড়ীর ছেলের বিয়ের জন্য ১০০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। অন্য ছবিটিতে ১০০০-এর মধ্যে দাগ কেটে ১০ কোটি করা হয়েছে। ইয়েদুরাপ্পার দাবি, এই পাতা দু’টি ওই ডায়েরিরই। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, তাড়াহুড়ো করে ডায়েরিটি তৈরি করা হয়েছে। গত কাল সবচেয়ে নিম্নস্তরের রাজনীতি করেছে কংগ্রেস। রবিশঙ্কর প্রসাদের দাবি, ‘‘রাহুল গাঁধীর সাংসদ হিসেবে বেতন ছাড়া কোনও আয়ের অন্য কোনও স্পষ্ট উৎস নেই। ২০০৪ সালের ভোটের সময়ে তাঁর ঘোষিত সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা। ২০০৯ সালে তা দাঁড়াল ২ কোটি টাকায়। ২০১৪ সালে তা দাঁড়ায় ৯ কোটি টাকায়। কী ভাবে এটা হচ্ছে তা আমরা জানতে চাই। ইউনিটেক সংস্থার তৈরি কয়েক কোটি টাকা মূল্যের দু’টি সম্পত্তি কি আপনি কিনেছেন?’’
ওই ডায়েরিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে ১৫০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা লেখা আছে বলে দাবি কংগ্রেসের। আজ অরুণ জেটলি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আগে সংবাদমাধ্যম খবরের সত্যতা যাচাই করত। কিন্তু এখন টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ সে সবের ধার ধারেন না। জেটলির দাবি, ‘‘এত দিন মিথ্যে খবর প্রচার করা হচ্ছিল। এ বার জালিয়াতি করা হয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই ডায়েরির পাতার লেখা আসল কি না তা যাচাই করতে ইয়েদুরাপ্পা তাঁর হাতের লেখার নমুনা আয়কর দফতরকে দিতে রাজি ছিলেন। কিন্তু যে কংগ্রেস নেতার বাড়িতে ওই নথি পাওয়া গিয়েছিল তিনি ডায়েরির আসল পাতা দিতে পারেননি। উল্টে বিষয়টি থেকে দূরত্ব তৈরি করেন।’’ জেটলির বক্তব্য, ‘‘কোনও বিষয় প্রকাশ করার স্বাধীনতা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অঙ্গ। কিন্তু সম্মানের সঙ্গে বাঁচার অধিকারও জীবনের অধিকারের অঙ্গ। দু’টিই মৌলিক অধিকার। একটি কখনও অন্যকে খর্ব করতে পারে না।’’
সংবাদ সংস্থা