অসমে পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী বাছাই নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক। আর এই বিতর্কে জড়িয়ে তিন প্রধান প্রতিপক্ষ, বিজেপি, কংগ্রেস ও অগপ।
অগপ প্রার্থী পাক্কা চোরাশিকারি, এই খবর থিতোতে না থিতোতেই দেখা গেল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকাতেও আর এক চোরাশিকারি। তারপরেই সামনে এল করিমগঞ্জের এক বিজেপি প্রার্থী গরু পাচারের দায়ে অভিযুক্ত। তিন মাসে জেলে থাকার পর জামিনে মুক্ত। এই বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার বিতর্ক কংগ্রেসের এমএ পাশ করা এক প্রার্থীকে ঘিরে। যিনি একটি কলেজের ভাইস-প্রিন্সিপালও।
ধুবুরি জেলার মানকাচর বিধানসভা কেন্দ্রের ঝগড়ারচর গ্রাম পঞ্চায়েত ভোটে ‘এমএ পাশ’ তরুণীকে প্রার্থী করে বুক ঠুকেছিলেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতারা। শুধু এমএ পাশই নন, প্রার্থী ইবলিমা সুলতানা মানকাচর ডিএস জুনিয়র কলেজের ভাইস প্রিন্সিপালও! পঞ্চায়েতে এমন ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী যে নিজেই দলের গর্বের বেলুন প্রকাশ্যে ফাটিয়ে দেবেন তা তাঁরা ভাবতেও পারেননি।
মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন তিনি। সুন্দরী, হাস্যমুখী প্রার্থী নিজেই বলেন, “আমি তো এমএ পাশ। কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল। প্রথম বার ভোটে দাঁড়াচ্ছি। আমি আমার গ্রামের মানুষদের সেবা করতে চাই।” সাংবাদিকরা ভাইস প্রিন্সিপাল প্রার্থীকে হাতের কাছে পেয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, ভারতের রাষ্ট্রপতির নাম কী? ইবলিনার প্রথম বোমা, ‘পি এম মোদী’।
বার বার একই প্রশ্নে উত্তর কিন্তু বদলাচ্ছিল না। একবার হালকা করে সনিয়া গাঁধীর নামও বলার চেষ্টা করেন। পাশে দাঁড়ান কংগ্রেসের মহিলা সদস্যরা ফিসফিস করে তাঁকে রামনাথ কোবিন্দের নাম বলার চেষ্টাও করেন।
আরও পড়ুন: মুলায়মের জন্মদিন ঘিরে দু’ভাগ যদুবংশ
পরের প্রশ্ন ছিল, অসমের রাজ্যপাল কে? ‘রাজ্যপাল’ কী জিনিস সেটাই বুঝতে পারছিলেন না ইবলিনা। শেষ পর্যন্ত বলেন, “আমি আসলে শিলংয়ে লেখাপড়া করেছি। ইংরেজি মিডিয়াম। তাই অসমীয়া প্রশ্ন ঠিকঠাক ধরতে পারছি না।”
আরও পড়ুন: ফ্যাক্স মেশিনই এখন সবচেয়ে বড় খলনায়ক উপত্যকার রাজনীতিতে!
নাছোড় সাংবাদিকরা এর পর ইংরেজিতেই জিজ্ঞাসা করেন, অসমে ক’টি জেলা আছে? ইবলিনা বলেন, অসমে একটাই জেলা। অবাক সাংবাদিকদের প্রশ্নে খানিকটা বিরক্ত হয়েই ইংরাজি ও বাংলায় ইবলিনা জানান, “আরে এতবার বলার কি আছে! অসমে তো জেলা একটাই। ধুবুরি।” এর পর জেলা কংগ্রেসের মহিলা সদস্যরা আর ঝুঁকি না নিয়ে ইবলিনাকে একা রেখেই সরে পড়তে থাকেন। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের দেবব্রত শইকিয়া ইবলিনার সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুঁথিগত জ্ঞানই তো সব নয়। তাঁর রাজনৈতিক, সামাজিক, সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে জ্ঞান থাকলেই হবে।’’