অখিলেশ সিংহ যাদব (বাঁ দিকে) এবং রাহুল গান্ধী। —ফাইল ছবি।
মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে তাদেরও আসন ছাড়তে হবে, তা হলেই উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেসকে প্রাথমিক ভাবে অন্তত দু’টি আসন ছাড়বে সমাজবাদী পার্টি। শনিবার দু’দলের মধ্যে শুরু হওয়া উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচন নিয়ে বৈঠকে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছে অখিলেশ যাদবের পার্টি। রাজ্যের ১০টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তার পরেই আসন সমঝোতা নিয়ে শনিবার বৈঠকে বসেছিল দু’দল।
উত্তরপ্রদেশের এই ১০টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন জাতীয় রাজনীতির অঙ্কেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক মাস আগেই লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে জোর ধাক্কা দিয়েছে কংগ্রেস-এসপি জোট। যার জেরে চিড় ধরেছে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ভাবমূর্তিতে। দলের অন্দরেই তাঁকে সরানোর চাপ উঠতে শুরু করেছে। এই উপনির্বাচনে ফের এসপি-কংগ্রেস জোট বড় জয় পেলে যোগীকে সরানোর দাবি আরও বাড়বে বলেই বিজেপির অন্দরের ইঙ্গিত। এই অবস্থায় যোগী নিজের পুরনো উগ্র হিন্দুত্ব এবং মুসলিম বিদ্বেষকে তাস করেই জমি ফিরে পেতে চাইছেন। এই অঙ্কে ভর করেই উপনির্বাচনে ফের নিজের শক্তি দেখাতে মরিয়া যোগী আদিত্যনাথ।
অন্য দিকে কংগ্রেস-এসপি জোটও এই ভোটের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে। এই উপনির্বাচনেও বিজেপিকে উত্তরপ্রদেশে টেক্কা দেওয়া গেলে রাজ্যস্তরে যেমন বিজেপির শক্তি দুর্বল হবে, তেমনই জাতীয় স্তরেও ধাক্কা খাবে এমনিতেই কেন্দ্রে কিছুটা নড়বড়ে ও শরিক-নির্ভর নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সে কারণে অঙ্ক কষে এগোতে চাইছে দু’দলই।
কিন্তু গোল বেধেছে জোটের আসন সমীকরণে। এসপি-র দাবি মেনে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে তাদের অন্তত ১০-১২টি আসন ছাড়তে গেলে সে রাজ্যে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা কমার সম্ভাবনা। একই ভাবে ৯০ আসনের হরিয়ানায় এসপি-কে অন্তত ৫টি আসন ছাড়া কঠিন কংগ্রেসের পক্ষে। এ দিকে তাদের দাবি মানা হলে উপনির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের ১০টি আসনের মধ্যে মির্জাপুর এবং গাজ়িয়াবাদের মাঝওয়া— মাত্র এই দু’টি আসন কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি এসপি। যদিও এই দু’টি আসনের কোনওটিই এসপি বা কংগ্রেসের দখলে ছিল না। ফলে সমঝোতা নিয়ে বেশ চাপে কংগ্রেস।
এসপি-র জাতীয় মুখপাত্র রাজেন্দ্র চৌধরি বলেছেন, ‘‘আমরা মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানাতেও নিজেদের সংগঠন বাড়াতে চাইছি। এমনিতে কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের দারুণ সমঝোতা রয়েছে। কিন্তু ওই দুই রাজ্যে কী হয়, তা দেখে সমঝোতা হবে দু’দলের মধ্যে। এই অবস্থায় কংগ্রেসের রাজ্য নেতারা তাকিয়ে রয়েছেন রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর দিকে। তাঁদের সঙ্গে অখিলেশ যাদবের ব্যক্তিগত সুসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে কোন পথে সমঝোতা হয়, এখন সেটাই দেখার।