টিকার জোগান নিয়েও উঠছে প্রশ্ন
BJP

Covid 19 Vaccine: বড়দের বাকি বহু, শিশুদের কবে হবে, টিকার জোগান নিয়েও উঠছে প্রশ্ন

বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী সরকার এখনও ওমিক্রনের বিপদ লঘু করে দেখছে। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২১ ০৪:৫৫
Share:

ফাইল চিত্র।

দেশের ৫ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের কবে টিকা দেওয়া হবে আর ১৮ বছরের বেশি বয়সিদের টিকাকরণের কর্মসূচিই বা কবে শেষ হবে—তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিরোধীরা। বড়দিনের রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের জন্য টিকা ও স্বাস্থ্যকর্মী, ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার ও বয়স্কদের জন্য অতিরিক্ত টিকার ডোজ় ঘোষণা করেছেন। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী সরকার এখনও ওমিক্রনের বিপদ লঘু করে দেখছে। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। টিকার জোগান ও টিকাকরণের গতি বাড়ানোর বদলে প্রধানমন্ত্রী টেলিভিশনের পর্দায় বক্তৃতা দিতে ব্যস্ত। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ও একই গাফিলতি হয়েছিল। কংগ্রেসের বক্তব্য, টেলিভিশনের পর্দায় উদয় হয়ে বাগাড়ম্বর করলে গাফিলতির ক্ষত ভরবে না।

Advertisement

চার দিন আগেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী প্রশ্ন তুলেছিলেন, এখনও দেশের বহু মানুষ টিকা পাননি। বুস্টার ডোজ় কবে দেওয়া হবে? প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে রাহুলের দাবি, সরকার তাঁর পরামর্শ মেনে নিয়ে ঠিক পদক্ষেপ করেছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল-সহ আরও কয়েক জন বিরোধী মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরাও কেন্দ্রের কাছে বুস্টার ডোজ় চালু করার দাবি জানিয়েছিলেন। কংগ্রেসের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন। যথেষ্ট পরিমাণে বুস্টার ডোজ় রয়েছে তো? স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে কেন ৩ বছরের বেশি বয়সিদের জন্য টিকাকরণ শুরু হচ্ছে না?

কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী ১৫ থেকে ১৮ বছরের জন্য টিকার কথা ঘোষণা করেছেন। অথচ গোটা দুনিয়ায় ৩ থেকে ১৮ বছরের শিশু-কিশোরদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। মোদী সরকার কেন এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না?

Advertisement

টিকার অভাবই এর কারণ বলে বিরোধী নেতারা সন্দেহ করছেন। সুরজেওয়ালা বলেন, সরকারি হিসেবেই দেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সি মানুষের সংখ্যা ৯৪ কোটি। সরকার সুপ্রিম কোর্টে বলেছিল, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সকলের দু’ডোজ় টিকাকরণ হয়ে যাবে। বাস্তবে ১৮ বছরের বেশি বয়সি ৩৫ শতাংশ মানুষের এখনও দ্বিতীয় ডোজ় টিকা পাওয়া বাকি। যাঁদের সংখ্যা ৩৬.৫ কোটি। ১১.৪ কোটি মানুষ কোনও টিকাই পাননি। প্রায় ২২ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী, ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারকেও এখনও দ্বিতীয় ডোজ় টিকা দিতে হবে। অর্থাৎ প্রায় ৬০ কোটি ডোজ় টিকা প্রয়োজন। রাজ্যগুলির কাছে এই মুহূর্তে ১৭.৭ কোটি ডোজ় টিকা রয়েছে।

কংগ্রেসের হিসেবে, প্রধানমন্ত্রীর বড়দিনের ঘোষণার পরে আরও ৩৫ কোটি ডোজ়ের বেশি টিকার প্রয়োজন পড়বে। কারণ ১৫-১৮ বছর বয়সি ১০ কোটি কিশোর-কিশোরীর জন্য ২০ কোটি ডোজ় টিকা দরকার হবে। ৬০ বছরের বেশি বয়সি ও স্বাস্থ্যকর্মী-ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার মিলিয়ে আরও ১৫ কোটি মানুষকে সতর্কতামূলক ডোজ় দিতে হবে।

সুরজেওয়ালা বলেন, আগের ৬০ কোটি ও নতুন ঘোষণার পরে ৩৫ কোটি, মোট ৯৫ কোটি ডোজ় টিকা দরকার। টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির মাসে উৎপাদন ক্ষমতা ১৬.৮ কোটি।তা হলে দেশের মানুষ কবে টিকা পাবেন? সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “মোদী ১৫-১৮ বছর বয়সিদের টিকা ও বুস্টার ডোজ়ের ঘোষণা এমন সময়ে করছেন, যখন চলতি বছরের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণের লক্ষ্য ছুঁতেই সরকার ব্যর্থ। টিকা কোথায়? কেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ছাড়পত্র পাওয়া, ভারতে তৈরি কোভোভ্যাক্স বিদেশে রফতানি হচ্ছে, অথচ এ দেশে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না?”

কংগ্রেস নেতা সুরজেওয়ালার অভিযোগ, মোদী সরকার দায়িত্ব পালন করছে না। বারবার টিকাকরণের নীতি বদলাচ্ছে। করোনা মোকাবিলার বদলে প্রধানমন্ত্রীর মহিমা প্রচার ও নির্বাচনের জনসভা সরকারের অগ্রাধিকার। কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার আগে সরকার দেশের মানুষ জীবন ফের ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement