মধ্যপ্রদেশে দাবি তুললেন মায়াবতী। উত্তরপ্রদেশের জোটের অঙ্ক মাথায় রেখে তা মেনেও নিল কংগ্রেস।
তফসিলি জাতি, জনজাতি আইন লঘু করার প্রতিবাদে গত ২ এপ্রিল বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছিল। বিএসপি প্রধান মায়াবতী গত কাল দাবি তোলেন, ওই সময় তাঁর দলের বহু কর্মী-সমর্থককে বিনা অপরাধে গ্রেফতার করেছিল তৎকালীন বিজেপি সরকার। তাঁদের মুক্তি দিতে হবে। না হলে তিনি দুই রাজ্যের কংগ্রেস সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারে ফের চিন্তাভাবনা করবেন।
দলিত নেত্রীর ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থান সরকার জানিয়েছে, তারা মায়াবতীর দাবি মেনে নেবে। মধ্যপ্রদেশের আইন তথা পরিষদীয় মন্ত্রী পি সি শর্মা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘গত ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কংগ্রেস, এসপি, বিএসপি, বাম, নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের কর্মী, কৃষক, কর্মচারী এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যে সব মামলা দায়ের হয়েছিল, বর্তমান সরকার তা প্রত্যাহার করবে।’’
এ বিষয়ে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতও এ দিন বলেন, ‘‘ভারত বন্ধের সময় যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাঁদের মামলাগুলি
খতিয়ে দেখে তা প্রত্যাহার করা হবে।’’ মধ্যপ্রদেশের আইনমন্ত্রীর অবশ্য দাবি, মায়াবতীর হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতে মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে জোটের কথা মাথায় রেখেই মায়াবতীর দাবি মেনেছে কংগ্রেস। কারণ, মধ্যপ্রদেশে তাঁর দলের বিধায়ককে মন্ত্রী না করায় অসন্তুষ্ট সমাজবাদী পার্টির (এসপি) প্রধান অখিলেশ যাদব। তা তিনি গোপনও করেননি। অখিলেশ চাইছেন, হিন্দি বলয়ের সবথেকে বড় রাজ্যে মায়াবতীর সঙ্গেই থাকতে। বিএসপি নেত্রীও কংগ্রেসকে নিয়ে তেমন আগ্রহী নন। সম্প্রতি চর্চা শুরু হয়েছিল, অখিলেশ এবং মায়াবতী আসন রফাও চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। কংগ্রেসকে তাঁরা অমেঠী এবং রায়বরেলী ছাড়া কোনও আসন ছাড়তে চান না।
কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর, দলের সভাপতি রাহুল গাঁধী কোনও ভাবেই চান না, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-বিরোধী ভোট ভাগ হোক। কিন্তু তাঁর পক্ষে মাত্র দু’টি আসন মেনে নেওয়াও সম্ভব নয়। তাই কংগ্রেস নেতৃত্ব প্ল্যান-বি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। কংগ্রেসের ওই সূত্রটি জানাচ্ছে, প্রয়োজনে তারা তিরিশটি আসনে একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এমন আসনগুলিতে লড়বে, যেখানে তারা বিজেপির উচ্চবর্ণের হিন্দুভোটে ভাগ বসাতে পারবে। তাতে আখেরে লাভ হবে অখিলেশ-মায়াবতী জোটেরই। সম্ভবত সেই দিকে তাকিয়েই দাবি মেনে দলিত নেত্রীকে ইতিবাচক বার্তা দিল রাহুলের দল।