কুমার বিশ্বাসও কি চললেন, আপে দ্বন্দ্ব

এক জন আজ ক্যামেরার সামনে ভেঙে পড়লেন। আর এক জন সোমবার রাতেই দলের পিএসি (পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স কমিটি) থেকে পদত্যাগ করলেন। আর ক্যামেরায় কেন এলেন, তা নিয়ে প্রথম জনকে দোষারোপ করে সরব হলেন দলের আরও এক মুখ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৭ ০৩:৩৩
Share:

কুমার বিশ্বাস

এক জন আজ ক্যামেরার সামনে ভেঙে পড়লেন। আর এক জন সোমবার রাতেই দলের পিএসি (পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স কমিটি) থেকে পদত্যাগ করলেন। আর ক্যামেরায় কেন এলেন, তা নিয়ে প্রথম জনকে দোষারোপ করে সরব হলেন দলের আরও এক মুখ।

Advertisement

সব মিলিয়ে চূড়ান্ত অন্তর্কলহের মুখে আম আদমি পার্টি (আপ)। প্রথম জন, আপের শীর্ষ নেতা তথা কবি কুমার বিশ্বাস। দ্বিতীয় জন, আমানতুল্লা খান। কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দলে ভাঙন ধরানোর অভিযোগ এনে আপের ভিতরে যিনি বিরোধের ঝড় বইয়ে দিয়েছেন। আমানতুল্লার আরও অভিযোগ, দলে বিদ্রোহ ঘটানোর চেষ্টা ব্যর্থ হলে কুমার আপ ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার জন্য প্রাথমিক কথাবার্তাও বলে রেখেছেন।

তাই আজ থেকে দলের ৬৪ জন বিধায়কের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলা শুরু করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল স্তরে দলের কাজকর্ম নিয়েও খোঁজও নিচ্ছেন তিনি। পঞ্জাব, গোয়ার পরে দিল্লির পুরভোট— একের পর এক ভরাডুবি সামলাতে এটাই এখন লক্ষ্য কেজরীবালের। অনেকেই বলছেন, আপাতত আমানতুল্লাকে সরিয়ে কুমার বিশ্বাসকে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন কেজরী। এবং ভবিষ্যতে দলে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আনার কথাও ভাবছেন কেজরীবাল।

Advertisement

কিন্তু তাতেও যে কুমার বিশ্বাস শান্ত হননি তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে আজ বিকেলেই। গত রবিবার আমানতুল্লা অভিযোগ তোলেন, দলের বিধায়ক ও মন্ত্রীদের একাংশকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালকে দলের শীর্ষ পদ থেকে উৎখাত করার পরিকল্পনা করছেন কুমার। আজ সেই অভিযোগ খণ্ডন করে কুমার বলেন, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রী-উপমুখ্যমন্ত্রী বা দলের শীর্ষ পদে বসতে চাই না। কিন্তু দলের ভিতরে কোনও সমস্যা থাকলে আমি মুখ খুলবই।’’ শেষে অবশ্য দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা আজ রাতে ভেবে দেখব।’’ এর পরে দৃশ্যত ক্যামেরার সামনে চোখ ছলছল হয়ে যায় কুমারের। কান্নায় অবশ্য মন গলেনি আপ শীর্ষ নেতৃত্বের। আধ ঘন্টার মধ্যেই কেজরীবালের ডান হাত মণীশ সিসৌদিয়া বলেন, ‘‘টিভিতে বয়ানবাজি না করে দলের মধ্যে তিনি বিষয়টি তুলতে পারতেন।’’

দলের এই ভাঙন সামলাতে সোমবারই সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতে দলীয় বৈঠক করেছিলেন কেজরীবাল। সেখানে গিয়েছিলেন আমানতুল্লা। তার পরে পিএসি থেকে পদত্যাগ করে চলে যান তিনি। কুমার বিশ্বাস অবশ্য সেই বৈঠকে যাননি। তাঁর এই অনুপস্থিতিকে কটাক্ষ করে মণীশ বলেন, ‘‘আমি ও দলীয় নেতা সঞ্জয় সিংহ কুমারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তাতেও গতকালের বৈঠকে কুমার আসেননি। এ ভাবে ক্যামেরায় মুখ খুলে আসলে পার্টি কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছেন কুমার।’’

আপের এই টলোমলো দশা দেখে খুশি বিজেপি নেতৃত্ব। সভাপতি অমিত শাহের কথায়, ‘‘কেজরীবালজি আমাদের জয়ের জন্য ইভিএমের দিকে আঙুল তুলেছেন। এখন বুঝুন দিল্লির এই রায় দেশের রায়। আরও এক বার বোঝা গেল দেশের মানুষ নরেন্দ্র মোদীর পাশেই আছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement