বিধানসভায় ভোটাভুটি শেষ হতেই চওড়া হাসি রাওয়াতের মুখে। ছবি : পিটিআই।
আস্থা ভোটে জিতে হরীশ রাওয়তের সরকার ফের ফিরতে চলেছে উত্তরাখণ্ডে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেও দ্রুত বিধানসভা ভেঙে নির্বাচনে যেতেই আগ্রহী তিনি।
আজ সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে উত্তরাখণ্ডে আস্থা ভোট হয়। আনুষ্ঠানিক ভাবে সুপ্রিম কোর্ট যার ফলাফল আগামিকাল ঘোষণা করবে। তার আগে আজই একাধিক বিধায়ক জানিয়ে দিয়েছেন, ন’জন বিক্ষুব্ধ বিধায়কের অনুপস্থিতিতে ৩৩টি ভোট পেয়ে আস্থা ভোট জিতে নিয়েছেন রাওয়ত। আর বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে ২৮টি। তার মধ্যে কংগ্রেসের এক বিক্ষুব্ধ বিধায়কও রয়েছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩১ জনের সমর্থন।
কংগ্রেসের ৯ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক গতকালই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁদের সদস্যপদ খারিজকে চ্যালেঞ্জ করে। তার শুনানি হবে জুলাই মাসে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, হরীশ রাওয়ত চাইছেন তাঁর সরকার ফিরে এলেও দ্রুত নির্বাচনে চলে যাওয়া। আগামী বছর এমনিতেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু যে ভাবে তাঁর সরকারকে উৎখাত করা হয়েছে, সেই সহানুভূতি ও আবেগকে কাজে লাগিয়ে রাওয়ত দ্রুত ভোটের পক্ষপাতী। সনিয়া গাঁধী আজ বলেন, ‘‘এটি গণতন্ত্রের জয়।’’ রাষ্ট্রপতি শাসন জারির বিরোধিতা করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও বলেন, ‘‘আশা করি, এর পর কেন্দ্রীয় সরকার আর কোনও রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির চেষ্টা করবে না।’’
সুপ্রিম কোর্টের মতিগতি দেখে বিজেপি আগেই হারের আঁচ পেয়েছিল। তাই আজ থেকে পাল্লা ঝাড়তে শুরু করেছে তারা। রাজ্যসভায় আজ কংগ্রেসের হাঙ্গামায় উত্তরাখণ্ডের বাজেট পাশও আটকে যায়। এই প্রতিবাদে যোগ দেয় সিপিএমও। সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরির যুক্তি, বাজেটটি যেহেতু অর্থবিল, তাই লোকসভায় পাশের পর এটি রাজ্যসভায় পাশ না করালেও এমনিতে পাশ হয়ে যাবে। ফলে রাজ্যসভায় এটির অনুমোদন করিয়ে বিজেপির হাত শক্ত করার কোনও অর্থ হয় না।
বাম ও কংগ্রেসের আক্রমণের মুখে অরুণ জেটলি সাফাই দেন, সরকার জোর করে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করেনি। সেখানে একটি সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার সেই সঙ্কট কাটানোরই চেষ্টা করেছে মাত্র। সুপ্রিম কোর্ট যদি এ বারে সেখানে সরকার প্রতিষ্ঠার রায় দেয়, তা হলে নতুন সরকার নিজেদের মতো করে বাজেট পেশ করতে পারবে।
কিন্তু গোটা ঘটনা নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যেই নতুন করে গোলমাল শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব দলের হাইকম্যান্ডকে দুষে বলছে, আগে থেকেই দলের মধ্যে বিদ্রোহের খবর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বলা হয়েছিল। কিন্তু দল সেটিকে সামাল দিতে সময়মতো ব্যবস্থা নেয়নি। আর বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের অভিযোগ, বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার যাবতীয় সিদ্ধান্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। এখন দলেরই মুখ পুড়ছে। মায়াবতী আজ যে ভাবে বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করে কংগ্রেসের পক্ষে ভোট দেওয়ার নির্দেশ দিলেন দলের বিধায়কদের, উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের আগে সেটিও ভাবাচ্ছে বিজেপিকে।