ফাইল চিত্র।
কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ‘সময়’ দিতে পারলেন না’! তাই তাঁর বদলে অসম চুক্তির ৬ নম্বর দফা রূপায়ণ কমিটি তাদের রিপোর্ট ই-মেলে জমা দিল রাজ্যের মুখ্য সচিবকে। কমিটির প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিপ্লবকুমার শর্মা আজ জানান, গত কাল রাতে মুখ্যসচিব সঞ্জয় কৃষ্ণকে রিপোর্ট মেল করা হয়েছে। কপি পাঠানো হয়েছে অসম চুক্তি রূপায়ণ বিভাগকেও।
এই রিপোর্টে কি কি সুপারিশ রয়েছে, তা এ দিনও আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করা হয়নি। যদিও অনেক তথ্যই সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। বলা হচ্ছে, অসমিয়ার সংজ্ঞা নির্ধারণে অসম চুক্তিতে বলা ১৯৭১ সালের বদলে ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরা, ইনারলাইন পারমিট চালু করা, অসমিয়াদের জন্য জমি ও সম্পত্তির অধিকার ও ১০০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের সুপারিশ রয়েছে রিপোর্টে। অসমের বিশেষ করে বরাক উপত্যকার বাঙালি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এর সমালোচনা ও প্রতিবাদে মুখর। অসম প্রদেশ তৃণমূলের দাবি, একাংশের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য যদি ভিত্তিবর্ষ বদলানো হয় তা হলে ১৮২৬ সালকেই ভিত্তিবর্ষ করা হোক। কারণ ওই বছর ইয়ান্দাবুর সন্ধির মাধ্যমে অসম ভারতের অংশ হয়েছিল। ১৯৫১ সালের ভিত্তিতে অসমিয়া চিহ্নিত করা অসাংবিধানিক। এতে রাজ্যে অশান্তি তৈরি হবে। তাদের আরও দাবি, অসমিয়াদের জন্য রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক রক্ষাকবচও অনির্দিষ্টকালের জন্য না-করে ১০ বা ২০ বছরের জন্য করা উচিত।
বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য সংস্কৃতি সম্মেলনের মতে, তথাকথিত অসমিয়া ভূমিপুত্রদের ১০০ শতাংশ সংরক্ষণের বিষয়টি বাঙালিদের জন্য আশঙ্কার কারণ। নাগরিক অধিকার রক্ষা সমিতির দাবি, বিজেপি এক দিকে সিএএর মাধ্যমে বাঙালিদের নাগরিকত্ব ও অন্যান্য অধিকার দেবে বলছে, অন্য দিকে এই কমিটির সুপারিশ বাঙালিদের অধিকার কেড়ে নিতে চলেছে। এনআরসিতে বাদ পড়া ৫ লক্ষকে নাগরিকত্ব দিতে গিয়ে বিজেপি সরকার বাকি ৯০ লক্ষ বাঙালির অধিকার খর্ব করতে চলেছে।
এআইইউডিএফ-এর সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, “১৯৫১-কে ভিত্তিবর্ষ ধরলে তার পর থেকে ১৯৭১-এর মধ্যে অসমে আসা মানুষদের কী হবে? এতে আরও বিভাজন ও অশান্তি দেখা দেবে।”
আমসুর উপদেষ্টা আজিজুর রহমানের বক্তব্য, অসমের অন্তত ৩৫% মানুষের হাতে ১৯৫১ সালের আগে অসমে আসার তথ্য নেই। সেই তথ্য সরকারের হাতেও নেই। অতীতের ভোটার তালিকারও সব জেলার তথ্য নেই। তাঁর বক্তব্য, “এই অবস্থায় কিসের ভিত্তিতে নিখুঁত ভাবে অসমিয়া চিহ্নিতকরণের কাজ
হবে? এনআরসির কাজও হয়েছে ১৯৭১-কে ভিত্তিবর্ষ
করে। নতুন করে জটিলতা বাড়ানো অযৌক্তিক।”