প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডে। শুক্রবার, নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
আর দিন সাতেক পরেই কেন্দ্রীয় বাজেট। তার আগে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আমজনতার ঘাড় থেকে করের বোঝা কমানোর পরামর্শ দিলেন খোদ প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডে। সেই সঙ্গে বললেন, অত্যধিক কর চাপিয়ে দেওয়া এক ধরনের সামাজিক অবিচার, যা সরকার নিজেই করে থাকে তার নাগরিকদের সঙ্গে। পাশাপাশি কর ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ভারতের প্রাচীন আইনের উদাহরণ টেনে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মৌমাছি যে ভাবে কোনও আঘাত বা ক্ষতি না-করে ফুল থেকে মধু আহরণ করে, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ঠিক সে ভাবেই কর আদায় করা উচিত।’’
এ দিন নয়াদিল্লিতে আয়কর আপিল ট্রাইবুনালের এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কর ফাঁকি দেওয়া যেমন দেশের নাগরিকদের প্রতি সামাজিক অবিচার, তেমনই ইচ্ছেমতো বা অত্যধিক কর বসানোও সরকারের তরফে এক ধরনের সামাজিক অবিচারেরই ফল।’’
এ দিন কেন্দ্রের উদ্দেশে দেশের প্রধান বিচারপতির বার্তা অবশ্য শুধু কর কমানো বা তার আদায় প্রসঙ্গেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সার্বিক উন্নয়নের পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: রাজনীতির অপরাধ মুক্তির পথ বলতে হবে কমিশনকেই
এই মুহূর্তে কাহিল চাহিদার জেরে ঝিমিয়ে দেশের অর্থনীতি। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধি নেমেছে ৪.৫ শতাংশে। বিপজ্জনক হারে মাথা তুলছে মূল্যবৃদ্ধি। কর্মসংস্থানের কঙ্কালসার চেহারা প্রকট করে বেকারত্ব বাড়ার হিসেব দিচ্ছে নানা পরিসংখ্যান। এই সব কিছু নিয়ে নাগাড়ে মোদী সরকারকে আক্রমণ করছেন বিরোধীরা। এই অবস্থায় দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ করার যে পরামর্শ সরকারকে দিলেন প্রধান বিচারপতি, তাকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
জমে থাকা কর সংক্রান্ত মামলাগুলি নিয়েও এ দিন আশঙ্কা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। সওয়াল করেন দ্রুত বিরোধ নিষ্পত্তির পক্ষে। তাঁর মতে, দ্রুত সমস্যা মিটলে উৎসাহ পাবেন করদাতা, আইনি জটিলতায় আটকে থাকবে না সাধারণ মানুষের অর্থ। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হলে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবেন তাঁদের কত টাকা দিতে হবে আর সরকার জানতে পারবে তারা কত টাকা পাবে।