প্রতীকী ছবি।
ফের ভারতীয় আকাশসীমায় ঢুকে পড়ল চিনা সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার।
ডোকলামের তিক্ত সম্পর্কের রেশ কাটিয়ে ভারত এবং চিন ঘোষিত ভাবেই মতৈক্যের ক্ষেত্রগুলিকে বাড়ানোর চেষ্টা করছে। পাশাপাশি, পারস্পরিক স্নায়ুচাপও বহাল রাখছে দু’দেশ। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, এশিয়ার দু’টি শক্তিধর দেশের সম্পর্কের বর্তমান বাস্তবতা এটাই।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই চলতি মাসে এই নিয়ে দু’বার (এর আগে ৮ মার্চ) চিনা সেনার হেলিকপ্টার ঢুকে পড়ল ভারতের আকাশসীমায়। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গত কাল ভারত-চিন সীমান্তের চারটি পৃথক পৃথক ভারতীয় আকাশসীমায় ঢুকেছে চিনা কপ্টার। যার মধ্যে একটি হল উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার বারাহোতি এলাকা, যেটি কি না কৌশলগত ভাবে ভারতের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডোকলামের মতোই চামোলির অধিকার নিয়েও চিনের সঙ্গে ভারতের মতভেদ রয়েছে। এই এলাকায় আইটিবিপি জওয়ানদের সেনার পোশাকে অথবা অস্ত্র নিয়ে টহল দেওয়ার প্রশ্নে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অন্য দিকে, এখানে চিনা সেনারও প্রবেশাধিকার নেই।
এ হেন বারাহোতিতে চিনা সেনা কপ্টারের আকাশসীমা লঙ্ঘন নিঃসন্দেহে উদ্বেগ বাড়িয়েছে নয়াদিল্লির। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, চিনা কপ্টার কিছু ক্ষণ ভারতীয় আকাশসীমায় চক্কর কেটে ফিরে যায়। সম্ভবত ওখানে ভারতীয় সেনার ছবি তোলাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। এ ছাড়া লাদাখের দু’টি এলাকার উপরেও চক্কর কেটেছে চিনা কপ্টার।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকের রহস্য-মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য
আগামি মাসে চিনে যাচ্ছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তার আগে গত কালই তিনি বলেছেন, ‘‘ডোকলামের মতো কোনও অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটলে তার জন্য প্রস্তুত ভারত। আমরা সেনার আধুনিকীকরণ চালিয়ে যাচ্ছি। দেশের অখণ্ডতা বজায় রাখা হবে।’’
আকাশ এবং স্থলপথে চিনের বিরুদ্ধে স্নায়ুর চাপ বজায় রাখার পাশাপাশি সমুদ্রপথেও চিনা আগ্রাসনের মোকাবিলায় সক্রিয় হয়েছে নয়াদিল্লি। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা আধিপত্য খর্ব করার জন্য গত বছরেই জাপানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘এশিয়া আফ্রিকা গ্রোথ করিডর’ গড়ার বিষয় চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ভারত। সম্প্রতি আসিয়ান-ভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়াকেও পাশে টেনে এই করিডরে সামিল হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সাউথ ব্লক। গত সপ্তাহে একটি প্রশ্নের লিখিত উত্তরে এ কথা জানিয়ে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ বলেছেন, ‘‘সমুদ্রপথে প্রত্যেকটি দেশের সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ডের সীমারেখার প্রতি মান্যতা, আন্তর্জাতিক আইন এবং পরিবেশ আইন মেনেই এই সংযোগ প্রকল্পটিতে এগোনো হবে।’’ কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, চিনের ‘ওবর’ মেগা প্রকল্প যাতে গোটা অঞ্চলের অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত ভারসাম্য টলিয়ে না দেয়, সে জন্য আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপানের মতো দেশগুলিকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে চাইছে ভারত। এশিয়া-আফ্রিকা করিডর ‘ওবর’-এর পাল্টা দেওয়ারই চেষ্টা।