—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বেশ কিছু দফতর, এমনকি রিলায়েন্স সংস্থা এবং এয়ার ইন্ডিয়ার দফতরের নথি হ্যাক করা হয়েছে। দাবি করল চিনের এক হ্যাকিং গোষ্ঠী। এমন সময়ের ডেটা হ্যাক করা হয়েছে বলে অভিযোগ, যখন লাদাখের গলওয়ান সীমান্ত ছিল উত্তপ্ত। অভিযোগ, এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফও), রাষ্ট্রচালিত পেনশন তহবিল, বিএসএনএল এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালের নথি হ্যাক করেছে চিনের সংস্থাটি। একটি ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এই তথ্য প্রকাশ করেছে। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, মন্ত্রকের সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট, কর্মীদের ব্যক্তিগত কম্পিউটার থেকে নথি হ্যাক করা হয়েছে। অভিযোগ, শুধু ভারত নয় চিন-বন্ধু বলে পরিচিত বিভিন্ন দেশের ডেটাও হ্যাক করেছে ওই সংস্থা।
চিনের ওই হ্যাকিং সংস্থা আই-সুন দাবি করেছে, ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য তারা হাতিয়েছে। শুধু ভারত নয়, আরও বেশি কিছু দেশের সরকারি নথি হাতিয়েছে বলেও দাবি সংস্থাটির। সূত্রের খবর, চিন সরকারের থেকে বরাত পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতাতেও নেমেছিল তারা। সংস্থাটি আরও দাবি করেছে, আধা-স্বায়ত্তশাসিত হংকং শহরের বিশ্ববিদ্যালয়, ‘গণতান্ত্রিক সংগঠন’-এর নথিও হ্যাক করেছে। এই নিয়ে গত সপ্তাহে গিটহাবে একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছিল সংস্থার তরফে। সেখানেই তারা জানিয়েছিল, কী কী নথি হ্যাক করা হয়েছে। যদিও সংবাদ সংস্থা এএফপি সেই ‘হ্যাক’ হওয়া নথি যাচাই করেনি।
নথি চুরি থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি তৈরি করে ম্যালওয়্যারবাইটস সংস্থা। সেই সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, শুধু ভারত নয়, ফ্রান্স, কম্বোডিয়া, তাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম-সহ আরও কিছু দেশের সরকারি দফতরের নথি হ্যাক করেছে চিনের ওই সংস্থা আই-সুন। বৃহস্পতিবার সকালে এই সংস্থার ওয়েবসাইট আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার এই সংস্থার ওয়েবাসাইটের স্ক্রিনশট সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, সংস্থার সদর দফতর রয়েছে সাংহাইতে। বেজিং, সিচুয়ান, জিয়াংসু, ঝেজিয়াংয়েও দফতর রয়েছে। এএফপির তরফে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংস্থা কোনও জবাব দেয়নি।
‘লিক’ হয়ে যাওয়া নথিতে দেখা গিয়েছে, ২০২১ সালের মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিভিন্ন দফতর থেকে ৫.৪৯ জিবি ডেটা হ্যাক করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, সে সময়ই লাদাখের গালওয়ান সীমান্ত ছিল উত্তপ্ত। মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছিল ভারত এবং চিন সেনার। অভিযোগ, এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফও), রাষ্ট্রচালিত পেনশন তহবিল, বিএসএনএল এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালের নথি হ্যাক করেছে চিনের সংস্থাটি। আরও অভিযোগ, ২০২০ সাল থেকে ভারতীয় অভিবাসন দফতরের ৯৫ জিবি ডেটা হাতিয়েছে সংস্থা। ‘এন্ট্রি অ্যান্ড একজিট’ ডেটা বলে বর্ণনা করা হয়েছে সংস্থার তরফে। গুগল-ক্লাউডের মালিকানাধীন মান্ডিয়ান্ট ইন্টালিজেন্সের প্রধান জন হাল্টকুইস্ট সংবাদ সংস্থা ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছে, এই ডেটা একেবারেই ‘খাঁটি’। সাইবার জগতে নজরদারির বিষয়টিতে মদত দেয়, চিনের এমন এক সংস্থাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।