ডোকলামে ৭৩ দিনের টানাপড়েনের পরে এ বার অরুণাচলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর ফের মুখোমুখি ভারত ও চিনের সেনা। অরুণাচলের আসাফিলা এলাকায় ভারতীয় বাহিনীর টহলদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চিন। অভিযোগ এনেছে সীমান্ত লঙ্ঘনের। তবে ভারতীয় সেনা এই দাবি পুরোপুরি খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছে, ওই এলাকায় তারা নিয়মিত টহল দিয়ে থাকে। ফলে সীমান্ত পেরোনোর দাবি ভিত্তিহীন।
দুই দেশের সীমান্ত সমস্যা মেটানোর জন্য যে বর্ডার পার্সোনেল মিটিং(বিপিএম) হয়ে থাকে, সেখানেই গত ১৫ মার্চ বিষয়টি নিয়ে সরব হয় চিন। তাদের দাবি, আসাফিলা ও ফিসটেল-এ গত ডিসেম্বরের ২১ থেকে ২৩ তারিখের মধ্যে ভারতীয় সেনাকে বিরাট ভাবে টহলদারি করতে দেখা গিয়েছে। তবে বৈঠকে ভারতীয় সেনা জানিয়ে দেয়, অরুণাচলের আপার সুবানসিরি এলাকাটি ভারতের। আর সেখানে নিয়মিত টহল দিয়ে থাকে তারা। চিন একে ‘সীমান্ত লঙ্ঘন’ আখ্যা দেওয়ায়, তার প্রতিবাদ করা হয়। সেনা সূত্রের মতে, বেজিংয়ের তরফে সীমান্ত লঙ্ঘনের এমন অভিযোগ অবাক করার মতো ব্যাপার। কারণ, অতীতে ওই এলাকায় চিনা অনুপ্রবেশ নিয়ে বারবার প্রতিবাদ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। তবে বৈঠকে চিনা সেনার তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, আসাফিলায় সীমান্ত লঙ্ঘন দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে। জবাবে ভারতের প্রতিনিধিরা বলেন, এলএসি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা হয়েছে নয়াদিল্লির। ফলে ভবিষ্যতেও ওই এলাকায় ভারতীয় সেনাকে টহল দিতে দেখা যাবে।
ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সঙ্ঘাত এড়াতে এলএসি-র পাঁচটি জায়গায় বিপিএম হয়ে থাকে। এগুলি হল, অরুণাচলের বুম লা ও কিবিথু, লাদাখের দৌলত বেগ ওলডি ও চুশুল এ ছাড়া সিকিমের নাথু লা। ১৫ মার্চ ভারত ও চিনের মধ্যে বিপিএম-এর বৈঠকটি বসেছিল কিবিথু এলাকায় চিনের দিকে দাইমাই পোস্টে। বৈঠকে চিনা সেনা আরও অভিযোগ করেছে, টুটিং-এ ভারতীয় সেনা তাদের রাস্তা তৈরির সরঞ্জাম নষ্ট করে দিয়েছে। ভারত অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সেনা সূত্রের দাবি, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে, টুটিং-এ রাস্তা তৈরির জন্য এলএসি-র এক কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে পড়েছিল চিন। ভারতের সেনারা বাধা দিলে রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ হয়। ওই এলাকা ছেড়ে যায় চিনা সেনা। পরে তাদের রাস্তা তৈরির সরঞ্জাম ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেই জানিয়েছে ভারতীয় সেনা।