ফাইল চিত্র।
আগামী গ্রীষ্মে সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনার ছক কষছে চিন। এমনই রিপোর্ট দিয়েছে সেনা গোয়েন্দা বিভাগ। এর পরেই চিনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে সরকারের ভিতরে।
সেনার গোয়েন্দাদের রিপোর্টটি পৌঁছেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে। অক্টোবরে দেওয়া ১৫ পৃষ্ঠার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনাকে সংঘাতের মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ, কাশ্মীর ও অরুণাচল সীমান্ত— দু’টি ক্ষেত্রে একসঙ্গে, অর্থাৎ পাকিস্তান ও চিন যৌথ ভাবে সীমান্তে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করতে পারে।
আরও পড়ুন: মন্দির দর্শনে রাহুল, আরএসএস যাবে দরগায়
নির্মলা সীতারামন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হওয়ার পরে, সাউথ ব্লকের ‘ওয়ার রুম’-এ তিন সেনাপ্রধান তাঁর সামনে চিনের বর্তমান রণকৌশল সম্পর্কে কিছু গোপন তথ্য পেশ করেন। চিনের ব্যাপারে সামরিক গোয়েন্দাদের পাশাপাশি ‘র’, আইবি-রও মতামত নেওয়া হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী এই আশঙ্কা নিয়ে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠকেও বসেছিলেন। সেখানে সেনা গোয়েন্দাদের আগাম সতর্কতার বিষয়ে আলোচনা হয়।
সূত্রের খবর, বিদেশ সচিব জয়শঙ্করের নেতৃত্বে বিদেশ মন্ত্রক এ ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছে। তাদের যুক্তি, বেজিং দুনিয়ার সামনে নিজেদের অপ্রতিহত শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে ঠিকই। কিন্তু ভারতের উপর পেশিশক্তি দেখাতে চাইলে চিনের অর্থনীতি ও বাণিজ্যে বিরাট ধাক্কা লাগবে। আমেরিকা শুধু নয়, ভারতও চিনের এক বিরাট বাজার। আর বিদেশ মন্ত্রক মনে করে, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে ‘সীমিত’ যুদ্ধ বলে কিছু হতে পারে না। ফলে ভারতের উচিত কূটনীতির প্রক্রিয়াকে আরও সক্রিয় করা।
সূত্রের মতে, এই বিতর্কে প্রধানমন্ত্রী মধ্যপন্থার কথা বলেন। তাঁর মতে, কূটনৈতিক সক্রিয়তা বাড়ানো হোক। কূটনীতির আলোচনার পাশাপাশি দু’দেশের মানুষকে জোড়ার চেষ্টা হোক। এ জন্য রাজনৈতিক নেতারাই শুধু নন, শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশিষ্টরা কিংবা আমির খানের মতো জনপ্রিয় ভারতীয় চিত্রতারকাদের চিনে পাঠানো যেতে পারে। তবে এর পরেও প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ানোর কথা ভাবা যেতে পারে। বাড়ুক সেনা প্রস্তুতিও। এমন প্রস্তাবও রয়েছে, বাণিজ্য পরিকাঠামোর বিকাশে চিনা উদ্যোগে নিয়ে আলোচনার পরিস্থিতি এলে ভারতীয় অফিসারদের পাঠানো যেতে পারে।
ডিসেম্বরে ভারত-চিন সীমান্ত আলোচনা শুরু হবে। তবে সংঘাতের সম্ভাবনার কথা ভেবে প্রস্তুতিও চলছে জোরকদমে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গে ড্রোন, এফ-১৬ নিয়ে আলোচনা হয়েছে নির্মলার। আর আমেরিকা, ফ্রান্স, রাশিয়ার মতো দেশগুলির সঙ্গে এফ-১৬, রাফাল, সুখোই ৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান নিয়েও কথা এগোচ্ছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নথি বলছে, ছ’টি যুদ্ধবিমান নিয়ে চলার মতো রণতরী বানাচ্ছে চিন। ভারতের কমপক্ষে তিনটি যুদ্ধ বিমান রাখার মতো রণতরী চাই। কথা হচ্ছে ১৫৫ মিমি মিডিয়াম গানস্ কেনার ব্যাপারেও। এ ছাড়া, যৌথ উদ্যোগে আদানি ও অনিল অম্বানীর সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বে শতকরা নব্বই ভাগ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি আমদানি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উদ্দেশ্য, সোভিয়েত জমানার অস্ত্রভাণ্ডারের আধুনিকীকরণ!