দেশ জুড়ে ৫০০, হাজারের নোট বাতিলের প্রভাবে সব ক্ষেত্রেই বিক্রিবাটা কমে গিয়েছে। কিন্তু, চিত্তরঞ্জন পার্কে শিশুদের জন্য আয়োজিত বইমেলায় তার কোনও আঁচ পাওয়া যায়নি। কলকাতা থেকে দিল্লির এই বইমেলায় অংশ নিতে আসা প্রায় ৩০টি প্রকাশনী সংস্থাই লাভের মুখ দেখেছে এ বারের বইমেলায়। তার একটা কারণ অবশ্যই প্রবাসে এখনও বাংলা বইয়ের চাহিদা একই রকম রয়ে গিয়েছে। রবিবারই ছিল মেলার শেষ দিন।
এখনও ধোঁয়াশার মেঘ রাজধানীর আকাশে। নভেম্বরের মাঝামাঝিতেই শীত ঢুকে পড়েছে শহরে। শীতের উৎসবে সেজে উঠছে দিল্লি। শীতের উৎসব মানেই মেলা। আর সেই মেলা যদি হয় বইমেলা, তাও আবার কচিকাঁচাদের জন্য তা হলে শহরবাসীর উৎসাহ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে কালীবাড়ি প্রাঙ্গণে আয়োজিত হয় ‘একাদশ-তম সপ্তর্ষি ছোটদের বইমেলা’। সপ্তর্ষির সম্পাদক সুজয় ঘোষ বললেন, “টুডে রিডার, টুমরো লিডার— এটাই ছিল আমাদের এ বারের এই শিশুদের বইমেলার থিম।”
কার্টুন, ভিডিওগেমস, অ্যাপসের জগতে মগ্ন আজকের শিশুদের বই পড়ার প্রবণতা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। তা ছাড়া, বাংলা থেকে দূরে থাকার জন্য ও প্রবাসের স্কুলে বাংলা ভাষার সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হওয়ার জন্যই এ ধরনের বইমেলার খুব প্রয়োজন বলে মনে করেন সংস্থার অন্যতম সদস্য দীপক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “ডোরেমন-নবিতা, পাওয়ার রেঞ্জার্স, টম অ্যান্ড জেরি— ইত্যাদি কার্টুন চরিত্রগুলোর মধ্যেই আজকের শিশুদের কমিক্সের ধারণা সীমাবদ্ধ। নন্টে-ফন্টে বা হাঁদা-ভোঁদা-র মতো বাংলার কমিকগুলোর সঙ্গে এই প্রজন্মের শিশুদের কোনও যোগসূত্রই তৈরি হয়নি। তাই এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা চেয়েছি, আজকের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সঙ্গে আমাদের শৈশব ও বাংলার একটা যোগসূত্র তৈরি করতে।’’
শুধু বই-ই নয়, এই বইমেলার আরও এক আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কচিকাঁচারাই মূলত অংশগ্রহণকারী। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ২০০৫ সালে জ্ঞানপীঠ পুরষ্কারপ্রাপ্ত ও ১৯৯৫ সালে ‘কোই দুসরা নেহি’- কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরষ্কারপ্রাপ্ত হিন্দি ভাষার কবি কানোয়ার নারায়ণ ও ২০১৪ সালের নোবেল শান্তি পুরষ্কার প্রাপক বিশিষ্ট সমাজবিদ কৈলাশ সতীর্থ।
আরও পড়ুন, ‘এ ভাবে চললে কী খাবেন? ওঁরা দিন আনেন, দিনই খায় ওঁদের’