বিজ্ঞান ভবনের আলোচনাসভায় প্রধান বিচারপতি রমণা। ছবি টুইটার থেকে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতেই সরকার, আইনসভা এবং বিচারব্যবস্থায় ক্ষমতার ‘লক্ষ্মণরেখা’ মেনে চলার কথা বললেন প্রধান বিচারপতি এ ভি রমণা। সরব হলেন বিচারবিভাগে সরকারি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে। শনিবার বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং হাই কোর্টগুলির প্রধান বিচারপতিদের সভায় তিনি অভিযোগ করেন, বহু ক্ষেত্রেই আদালতের নির্দেশ অমান্য করছে সরকার।
সময় বিশেষে সরকার নিজের স্বার্থে বিভিন্ন মামলায় কালক্ষেপ করে বলেও দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আয়োজিত ওই সভায় মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার, সংসদ এবং বিচার ব্যবস্থার মধ্যে ক্ষমতার পৃথকীকরণ করে দিয়েছে সংবিধান। কর্তব্যপালনের ক্ষেত্রে সেই লক্ষ্মণরেখা পার করা নিয়ে সতর্ক থাকা উচিত সকলের। এর ফলে গণতন্ত্রই শক্তিশালী হবে।’’
দেশের বিচারব্যবস্থার পরিকাঠামোর উন্নয়ন নিয়ে আলোচনার জন্য আয়োজিত ওই সভায় প্রধান বিচারপতির এমন মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় বিচারব্যবস্থায় সরকারি হস্তক্ষেপের দিকেই তিনি ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে। বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতার কথাও শনিবার বলেছেন প্রধান বিচারপতি। সেই সঙ্গে বিচার প্রক্রিয়ায় গতি আনতে পুরনো, অপ্রাসঙ্গিক আইনগুলি বাতিল করার পরামর্শ দিয়েছেন আলোচনাসভায় হাজির মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যোগী আদিত্যনাথ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের।
শুধু তাই নয়, শনিবারের সবায় প্রধান বিচারপতির অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রেই আদালত রায় ঘোষণা করলেও তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত ভাবে সরকার নিস্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি, জনস্বার্থ মামলার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা বজায় রাখার উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘‘জনস্বার্থ মামলা যাতে ব্যক্তিস্বার্থ মামলায় পরিণত না হয়, সে দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।’’ ওই আলোচনাসভায় সরকারকে ‘দেশের সবচেয়ে বড় মামলাবাজ’ বলেও চিহ্নিত করেন তিনি। প্রধান বিচারপতি জানান, দেশের মোট মামলার ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রেই সরকারই একটি পক্ষ!