আমি থাকলে ইস্তফা দিতাম: চিদম্বরম

আর্থিক বৃদ্ধি, মূল্যবৃদ্ধি, বাণিজ্য ঘাটতি থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানের মতো সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেই বর্তমান সরকার ব্যর্থ বলে মত চিদম্বরমের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩০
Share:

পি চিদম্বরম।

আগামী ১২ মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাজেটের কোনও প্রস্তাবই কার্যকর হবে না। অথর্মন্ত্রী অরুণ জেটলির সমালোচনা করতে গিয়ে সোমবার কলকাতায় দাঁড়িয়ে এই অভিযোগ তুললেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। ভারত চেম্বার অব কমার্সের সভায় তাঁর মন্তব্য, ‘‘বর্তমান সরকার দেশের আর্থিক অবস্থা সামলাতে পুরোপুরি ব্যর্থ। জেটলির জায়গায় আমি থাকলে ইস্তফা দিতাম।’’

Advertisement

আর্থিক বৃদ্ধি, মূল্যবৃদ্ধি, বাণিজ্য ঘাটতি থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানের মতো সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেই বর্তমান সরকার ব্যর্থ বলে মত চিদম্বরমের। তিনি বলেন, ‘‘দেশের আর্থিক ব্যবস্থাকে শক্ত জমিতে দাঁড় করানোর ক্ষেত্রে এই সরকার অকৃতকার্য। তাদের আমলে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমার সুযোগ নিয়েও দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে পারেনি সরকার।’’

পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, বর্তমান সরকার যে জিএসটি চালু করেছে, তা আদৌ জিএসটি নয়। চিদম্বরম বলেন, ‘‘জিএসটিতে একটি মাত্র মূল হার থাকার কথা। তার থেকে কিছুটা বাড়িয়ে এবং কমিয়ে মেরিট লিস্ট এবং ডিমেরিট লিস্ট তৈরি করাই নিয়ম। বিশ্বে যে সমস্ত দেশে জিএসটি চালু, সেখানেই এই নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এখানে করের হারের বিভিন্ন স্তর তৈরি করে ৩ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কর ধার্য করা হয়েছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘নয়া ভারতে’ই দূর হবে বেকারি, দাবি মোদীর

বাজার থেকে ধার করা টাকা সরকার যে সব খাতে খরচ করছে, তারও সমালোচনা করেন চিদম্বরম। তিনি বলেন, দেশের আর্থিক অবস্থা খারাপের দিকে গেলে সরকারি খরচ বাড়ানো জরুরি। সরকার ওই খরচ করছে বাজার থেকে টাকা ধার করে। কিন্তু তা পরিকাঠামো ইত্যাদি উন্নয়নমূলক কাজে না লাগিয়ে সরকারের নিজস্ব দৈনন্দিন খরচ মেটাতে ব্যয় করা হচ্ছে। এরই বিরূপ প্রভাব পড়ছে মূল্যবৃদ্ধিতে।

মূল্যবৃদ্ধির ফলে ব্যাঙ্কে সুদ বাড়ার সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করে চিদম্বরম বলেন, এতে বাজার থেকে টাকা ধার নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের খরচ বাড়বে। বাড়বে শিল্পে তহবিল সংগ্রহের খরচও। যা মূল্যবৃদ্ধিতে আরও ইন্ধন জোগাবে।

কর্মসংস্থান নিয়েও মোদী সরকারকে এক হাত নেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতায় আসার আগে তারা দাবি করেছিল প্রতি বছর ২ লক্ষ করে কর্মসংস্থান হবে। সেখানে গত ৪ বছরে লাখখানেক কর্মসংস্থান হয়েছে। সরকার এমনকী পকোড়া বিক্রিকেও কর্মসংস্থানের মধ্যে ফেলেছে। উল্টে নোটবন্দির ফলে বহু লোক কাজ হারিয়েছেন।’’

শিক্ষার হাল নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, বিশেষ করে গ্রামে শিক্ষার মান গত ৪ বছরে কিছুই বাড়েনি। এক জন পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া দ্বিতীয় শ্রেণির বইও পড়তে পারে না। এমনকী ঘড়ি দেখতে জনে না।’’ তিনি বলেন, গত চার বছর ধরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি এবং কর্মসংস্থানে সরকারের প্রধান আর্থিক উপদেষ্টার সুপারিশগুলি উপেক্ষা করা হয়েছে। এই বাজেটে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার প্রস্তাব নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমার আশঙ্কা, ওই প্রকল্পে নিয়ম-কানুন এমন করা হবে, যাতে বেশি লোক প্রকল্পে সামিল না হতে পারেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement