ক্রমাগত বৃষ্টিপাতের ফলে জলমগ্ন চেন্নাই শহর। ছবি : টুইটার থেকে।
শনিবার থেকেই নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টিপাতের বিরাম নেই তামিলনাড়ুর চেন্নাই-সহ একাধিক জেলায়। একই অবস্থা পুদুচেরীতেও। প্রবল বর্ষণে জলে ভেসে গিয়ে ও বাড়ি ভেঙে তামিলনাড়ুতে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। ভেঙে পড়েছে ৫৩৮টি মাটির বাড়ি ও চারটি পাকা বাড়ি। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬.৮৪ মিলিমিটার গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে তামিলনাড়ুতে। চেন্নাইতে ২৪ ঘণ্টায় হয়েছে মোট ৩.২ সেমি বৃষ্টিপাত। শহরের নিচু অংশ থেকে জল বার করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
তবে আবহবিদেরা জানিয়েছেন চেন্নাইয়ের ভোগান্তির শেষ এখনই নয়। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের শক্তি বাড়ছে, ফলে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা এখনই কমছে না। তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশের কিছু অংশে আগামী ১০ ও ১১ নভেম্বরে প্রবল বর্ষণ হতে পারে। মঙ্গলবারই তাই তামিলনাড়ুর চেন্নাই, চেঙ্গলপাট্টু, ভিলপ্পুরম, কাঞ্চিপুরম-সহ ছয় জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে নীলগিরি, সালেম, কল্লাকুরিচি-সহ ন’টি জেলায়।
ক্রমাগত বৃষ্টিপাতের ফলে জলমগ্ন চেন্নাই শহর। যানবাহনের চলাচল ব্যাহত হয়েছে ব্যাপক ভাবে। দেখা দিয়েছে পানীয় জলের অভাবও। এই বিষয়ে মঙ্গলবার চেন্নাই পৌর প্রশাসনকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে মাদ্রাজ হাই কোর্ট। শুধু তাই নয়, আগামী শনিবারের মধ্যে শহরের পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তা হলে বিষয়টি আদালত নিজের হাতে তুলে নেবে বলেও জানানো হয়েছে আদালতের তরফে।
আজ চেন্নাই শহরের পরিস্থিতি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানির সময়ে সংশ্লিষ্ট বিচারপতির বেঞ্চ প্রশ্ন করে, ২০১৫ সালের ভয়াবহ বন্যার পরেও কেন শহরের প্রশাসন বন্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করেনি।
এ দিকে, শহরের জলমগ্ন অবস্থার জন্য তামিলনাড়ুর প্রাক্তন এডিএমকে সরকারকে দায়ী করেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। তিনি জানান, “আগের সরকার কোনও কাজই করেনি, আমরা শহরের সমস্যাগুলি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি।” বৃহত্তর চেন্নাইয়ের কমিশনার গগনদীপ সিংহ বেদী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শহর-সংশ্লিষ্ট চেম্বারবাক্কাম হ্রদ থেকে নিয়ন্ত্রিত ভাবে জল ছাড়া হচ্ছে। ২০১৫ সালে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে জল ছাড়ার জন্যই শহরের বন্যা পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল। পাশাপাশি প্রশাসনের তরফে ৫০০টিরও বেশি পাম্প, বৈদ্যুতিক করাত ও জেনারেটর সেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জলমগ্ন এলাকা থেকে লোক জনকে উদ্ধার করার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ৪১টি নৌকার।