চন্দ্রবাবুর মাল্যদান গাঁধী মূর্তিতে। ছবি: পিটিআই।
দিল্লিতে এসে গত সপ্তাহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সংসদীয় অফিসে বসে আঞ্চলিক দলগুলির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। আর আজ সদ্য এনডিএ-ত্যাগী চন্দ্রবাবু নায়ডু সেই কাজটিই সারলেন সেন্ট্রাল হলে বসে।
বাকি ছবিটা প্রায় এক। রাজ্যের বঞ্চনাকে মূলধন করে আগামী বছর আঞ্চলিক দলগুলি কী ভাবে এক হতে পারে, তা নিয়ে আজ একের পর এক বৈঠক করেন চন্দ্রবাবু। নরেন্দ্র মোদী সরকার অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেনি বলে এনডিএ ছেড়েছে চন্দ্রবাবুর দল তেলুগু দেশম (টিডিপি)। কেন্দ্রে সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের পরই চন্দ্রবাবু জানানা, জাতীয় রাজনীতিতে আসার ইচ্ছে তাঁর নেই। তিনি রাজ্যেই থাকতে চান।
আজ দিল্লিতে এসে চন্দ্রবাবু বৈঠক করেন তৃণমূল, এনসিপি, সমাজবাদী পার্টি (এসপি), বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি), শিবসেনা, সিপিএম, ডিএমকে-র মতো দলগুলির সঙ্গে। সূত্রের খবর, তৃণমূল এবং এনসিপি-র শরদ পওয়ারের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে বৈঠক করেছেন চন্দ্রবাবু। মমতার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তিনি। আজও তৃণমূলের লোকসভা নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে মমতাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। নায়ডু সুদীপবাবুকে জানিয়েছেন, টিডিপি সংসদে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পর মমতার দলের কাছ থেকে সহযোগিতা ও সমর্থন পেয়েছেন। আজ তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তাঁর মূল যে দু’টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে তার একটি হল, ২০১১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনকে অর্থ বণ্টন করার কেন্দ্রীয় নির্দেশ। দ্বিতীয়টি হল, সংসদে আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আটকে রাখা। নায়ডু জানিয়েছেন, অর্থ কমিশনের এই পক্ষপাতিত্বকে তিনি বড় আকারে তুলে ধরে রাজ্যে প্রচারে নামছেন।
রাজধানীতে এসে মমতা বলেছিলেন, অখিলেশ সিংহ যাদব এবং মায়াবতী এক হলে উত্তরপ্রদেশে সেই জোটকে কেউ রুখতে পারবে না। আজ চন্দ্রবাবু এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন এসপি, বিএসপি এবং তৃণমূলের সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, লোকসভায় এসপি-বিএসপি এক সঙ্গে লড়লে বিজেপি-বিরোধী জোটের লাভ হবে।
আঞ্চলিক দলের সঙ্গে বৈঠক করার ফাঁকেই কংগ্রেসের দুই নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং সুবিরামি রেড্ডি দেখা করেন চন্দ্রবাবুর সঙ্গে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটে অন্ধ্রপ্রদেশে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে চন্দ্রবাবুকে পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। তবে কংগ্রেস-বিরোধী রাজনীতি করে আসা চন্দ্রবাবুর পক্ষে এই প্রস্তাব মেনে কতটা এগোনো সম্ভব, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আজ চন্দ্রবাবু অবশ্য তাঁর পুরনো শরিক বিজেপির নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন বিমান মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হা। অন্ধ্রের বিমানবন্দর সংক্রান্ত দাবি মেটানো নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। দেখা করেন হেমা মালিনীও। বিজেপি থেকে বরখাস্ত হওয়া সাংসদ কীর্তি আজাদ এবং মার্গদর্শন মণ্ডলীতে চলে যাওয়া মুরলী মনোহর জোশীর সঙ্গেও কথা বলেছেন চন্দ্রবাবু।