ফাইল চিত্র।
যত সময় গড়াচ্ছে, ততই কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলনে অরবিন্দ কেজরীবালের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন বিরোধী নেতা-নেত্রীরা।
দিল্লির উপরাজ্যপাল তথা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কেজরীবালের লড়াইকে সমর্থন জানিয়ে শুরুতেই মুখ খুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সিপিএম নেতৃত্বও। আর আজ কেজরীবালদের ধর্নার চার দিনের মাথায় সরব হলেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। তাঁর টুইট, ‘রাজনৈতিক লাভের জন্য রাজ্যপালের দফতরকে কেন্দ্রের শাসক দলের ব্যবহার করার প্রবণতা সংবিধানের ভাবনার সঙ্গে খাপ খায় না।’ আপ শিবিরের সমর্থনে সরব ঝাড়খণ্ডের জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেনও। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের নীতি আয়োগের বৈঠক। তার আগে মোদী-বিরোধী লড়াইয়ে ক্রমশ এককাট্টা হচ্ছেন বিরোধীরা।
কেজরীবালদের অভিযোগ, কেন্দ্রের নির্দেশে ও উপরাজ্যপালের উস্কানিতে দিল্লির আমলারা চার মাস ধরে অলিখিত ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টিতে উপরাজ্যপাল অনিল বৈজলের হস্তক্ষেপ দাবি করে তিন সতীর্থ মন্ত্রীকে নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। বৈজলের কাছ থেকে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় উপরাজ্যপালের ভিজিটর্স রুমে ধর্না শুরু করেন তাঁরা। যা আজ চার দিনে পড়ল।
কেজরীবালের সঙ্গীদের মধ্যে সত্যেন্দ্র জৈন ও উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া ধর্নার পাশাপাশি অনশনও চালিয়ে যাচ্ছেন। সূত্রের খবর, দু’জনের শারীরিক অবস্থা বেশ উদ্বেগজনক। আজ দুপুরে বৈজলের আবাসের চৌহদ্দিতে চারটি অ্যাম্বুল্যান্স এসে দাঁড়ানোয় তুমুল জল্পনা তৈরি হয়। কেজরীবাল তড়িঘড়ি টুইট করে বলেন, ‘জোর করে আমাদের সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’ ভিডিয়ো বার্তায় মণীশের হুমকি, ‘‘জোর করে সরানো হলে জল খাওয়াও বন্ধ করে দেব।’’ ঘণ্টাখানেক থাকার পরেই অবশ্য চারটি অ্যাম্বুলেন্স চলে যায়।
এই লড়াইয়ে মোদী-বিরোধী শিবির যখন একজোট হচ্ছে, তখন রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে দূরত্ব বজায় রাখছে কংগ্রেস। কারণ কেজরীবাল দিল্লিতে কংগ্রেসের অন্যতম প্রতিপক্ষ। তাই আজ দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় মাকেন উল্টে বলেন, ‘‘শীলা দীক্ষিতের প্রথম সরকারের আমলে কেন্দ্রে বাজপেয়ী সরকার থাকা সত্ত্বেও দিল্লির উন্নয়ন হয়েছিল। কেজরীবাল কেন ব্যর্থ, তা নিয়ে আত্মসমীক্ষা করুন।’’ আর খোদ শীলার পরামর্শ, ‘‘কেজরীবালকে বুঝতে হবে, তিনি দিল্লি নামক কেন্দ্রশাসিত রাজ্যের
মুখ্যমন্ত্রী। ফলে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ থাকবেই। আরও ক্ষমতা চাইলে তাঁকে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে হবে।’’
বসে নেই বিজেপিও। দিল্লি সরকারের অচলাবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজধানীতে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে সওয়াল করেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী-উপমুখ্যমন্ত্রী ধর্নাতে বসায় রাজ্যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। দিল্লিতে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে তাই রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হোক।