Covid-19

ফের লকডাউনে চিন্তায় অর্থনীতি

অর্থনীতির সঙ্কটের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা রামমন্দিরের শিলান্যাস নিয়ে ব্যস্ত দেখে শরদ পওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরিরা সরকারের অগ্রাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০৩:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি

অতিমারির ধাক্কায় সঙ্কটগ্রস্ত অর্থনীতির বদলে মোদী সরকার অন্য বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়ায় আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। সরকারের পাল্টা দাবি ছিল, অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আজ অর্থ মন্ত্রকই জানাল, এখন অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা কম। কারণ, করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন রাজ্যে মাঝেমধ্যেই লকডাউন করতে হচ্ছে।

Advertisement

যে প্রধান ১২টি রাজ্য দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি, এখন করোনা সংক্রমিতদের ৮৫ শতাংশই সেই সব রাজ্যে। কোভিড পজ়িটিভের শতকরা ৪০ ভাগ দুই প্রধান শিল্পোন্নত রাজ্য মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ুতে। জুন মাসের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাই আজ অর্থ মন্ত্রকের মন্তব্য, ‘‘আনলক পর্ব শুরু হওয়ায় অর্থনীতির চরম দুর্দশা এখন অতীত বলেই মনে হচ্ছে। অর্থনীতির বিভিন্ন মাপকাঠি এপ্রিলে অভূতপূর্ব ভাবে খাদে নেমে গিয়েছিল। সেখান থেকে জুনে উন্নতি হয়েছে। কিন্তু করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি ও রাজ্য স্তরে নিয়মিত লকডাউনের ফলে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।’’

জুলাইয়েই দেশে উৎপাদন শিল্পের সূচক জুনের তুলনায় অনেকটা পড়েছে। ফলে এমনিতেই কেনাকাটা কম হচ্ছিল। তার উপর রাজ্য স্তরে লকডাউনের ধাক্কা লাগছে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের দাবি, বিদ্যুৎ খরচ, রেলে পণ্য পরিবহণ, ডিজেল বিক্রি, হাইওয়েতে টোল আদায়, ইস্পাত-সিমেন্টের উৎপাদন বৃদ্ধি থেকে অর্থনীতির আরোগ্যের ইঙ্গিত মিলছে। তবে একাধিক রাজ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ায় ঝুঁকির কথাও মানছে তারা।

Advertisement

অর্থনীতির সঙ্কটের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা রামমন্দিরের শিলান্যাস নিয়ে ব্যস্ত দেখে শরদ পওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরিরা সরকারের অগ্রাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। অর্থ মন্ত্রকের রিপোর্টের পরে দাবি উঠেছে, সরকার অর্থনীতির উদ্ধারে মন দিক।

দু’দিন আগেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও কংগ্রেস নেতা প্রবীণ চক্রবর্তী এক নিবন্ধে লিখেছিলেন, অর্থনীতি চাঙ্গা করতে হলে মানুষের আস্থা ফেরাতে হবে। মনমোহনের যুক্তি ছিল, আর্থিক বৃদ্ধির শ্লথ গতি নিয়েই করোনা-সঙ্কটে পা রেখেছে ভারত। বেকারত্ব ও ব্যাঙ্কের সমস্যা আগে থেকেই চলছিল। অতিমারি তাকে আরও যন্ত্রণাদায়ক করে তুলেছে। আজ রাহুল গাঁধীর মন্তব্য, ‘‘অর্থনীতির উপর থেকে মানুষের ভরসা উবে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর টিমের সেই বোধ নেই, সমস্যা সমাধানের উপায়ও জানা নেই। প্রতিটি ভারতীয় সেটা বুঝতে বাধ্য হবেন— এটা শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’

আরও পড়ুন: ‘দলিত ক্ষোভ’ নিয়ে কৌশলী চাল মায়ার

কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের আশা, সঙ্কটের সময়ে গ্রামীণ অর্থনীতি, বিশেষ করে কৃষিক্ষেত্র অনেকটাই কুশনের কাজ করবে। কারণ, খরিফ ফসল বোনার সময় ভাল বৃষ্টি হয়েছে। চাষে আয় বাড়লে গ্রামের বাজারে চাহিদা বাড়বে। তবে চিন্তার কারণ হল, এক দিকে সরকারের আয় কমেছে, অন্য দিকে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে গিয়ে বাড়তি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। আইএমএফ-এর পূর্বাভাস ছিল, ২০২০ সালে বিশ্বের অর্থনীতি ৪.৯ শতাংশ সঙ্কুচিত হবে। তবে অর্থ মন্ত্রকের মতে, অগস্টের শেষে অর্থ বছরের প্রথম তিন মাস, অর্থাৎ এপ্রিল-জুনের বৃদ্ধির হার জানা গেলে অর্থনীতির আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা কিছুটা স্পষ্ট হবে।

আরও পড়ুন: বয়স্কভাতা নিয়ে কোর্ট

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement