সাংবাদিকদের মুখোমুখি রাজনাথ সিংহ
গণপিটুনির ঘটনা রুখতে কড়া আইন আনার জন্য দু’দিন আগেই কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সরকার যে এখনই এমন আইন আনার কথা ভাবছে না, লোকসভায় আজ তা স্পষ্ট করে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। উল্টে গণপিটুনি রোখার গোটা দায়িত্ব রাজনাথ রাজ্য সরকারগুলির উপরে ঠেলে দেওয়ায় প্রতিবাদে লোকসভা থেকে ওয়াক আউট করেছে কংগ্রেস।
কয়েক বছর ধরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গণপিটুনির একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। কখনও ধর্মের নামে, কখনও গোমাংস রাখা, কখনও ছেলেধারা সন্দেহে পিটিয়ে মারা হয়েছে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের। আজ লোকসভায় এ নিয়ে উদ্বেগ জানান কংগ্রেস সাংসদ কে সি বেণুগোপাল। গণপিটুনি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের দিনই স্বামী অগ্নিবেশের উপর হামলার ঘটনা নিয়ে সরব হন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হা গণপিটুনির ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মালা পরিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন বিরোধী শিবিরের সাংসদরা। পাল্টা প্রতিবাদ জানায় শাসক শিবিরও।
তুমুল হট্টগোলের মধ্যে জবাব দিতে গিয়ে রাজনাথ স্বীকার করে নেন, মোদীর শাসনে গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। কিন্তু তা রুখতে কোনও কড়া আইন আনা হবে কিনা, তা নিয়ে স্পষ্ট কিছুই জানাননি তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু বলেন, ‘‘কেন্দ্র চুপ বসে থাকতে পারে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০১৬ সালে এবং চলতি মাসেও নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করে দিয়েছে।’’ কেন্দ্রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে এ ধরনের ঘটনা রোখার দায় রাজ্যের ঘাড়ে ঠেলে দেন রাজনাথ। তাঁর যুক্তি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা রাজ্যের বিষয়। তাই এ ধরনের ঘটনা রোখা রাজ্যগুলির কর্তব্য। এ জন্য কড়া ব্যবস্থা রাজ্যকেই নিতে হবে। কেন্দ্রের এই যুক্তিতে তীব্র প্রতিবাদ জানায় বিরোধী দলগুলি।
গণপিটুনির ঘটনাগুলির বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, গুজব অনেকাংশেই দায়ী। রাজনাথ তা মেনে নিয়ে বলেন, ‘‘গুজব ছড়ানোর অন্যতম মাধ্যম সোশ্যাল মিডিয়া। এটা কী ভাবে রোখা যায়, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে এর সঙ্গে জুড়ে থাকা সংস্থাগুলিকে।’’
গণপিটুনি প্রশ্নে সরকারের জবাব সন্তুষ্ট করতে পারেনি কংগ্রেসকে। লোকসভা থেকে ওয়াক আউট করেন তাদের সাংসদরা। পরে শশী তারুর বলেন, ‘‘কেন্দ্র সন্তোষজনক উত্তর দিতে ব্যর্থ। এটা টেবিল টেনিস খেলা নয় যে বল একে অপরের কোর্টে ঠেলে কেন্দ্র-রাজ্য দায়িত্ব এড়াবে। নিরীহ মানুষেরা গণপিটুনির শিকার হচ্ছেন। এটা আটকানো জরুরি।’’