ছবি: পিটিআই।
শনিবার, এক দিনে দেশে বারোশোর বেশি পাখির মৃত্যুতে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করেছিল কেন্দ্র। আজ উত্তরপ্রদেশ-সহ সাত রাজ্যে বার্ড-ফ্লু ছড়ানোর কথা ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি ছ’টি রাজ্য অর্থাৎ হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, গুজরাত, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, কেরলে যদিও আগেই মৃত পাখির নমুনা পরীক্ষা করে বার্ড ফ্লু-এর অস্তিত্ব মিলেছিল।
করোনা পরিস্থিতিতে নতুন করে বার্ড ফ্লু ছড়ানোর খবরে দেশ জুড়ে আতঙ্ক বাড়ছে। রবিবার বার্ড-ফ্লু আক্রান্ত রাজ্যের তালিকায় উত্তরপ্রদেশের নাম ওঠার পরে কানপুর চিড়িয়াখানা সাময়িক ভাবে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত পাঁচ দিনে চিড়িয়াখানায় ৪টি মোরগ ও দু’টি টিয়ার মৃত্যু হয়েছিল। নমুনা পরীক্ষায় দু’টি ক্ষেত্রে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। গুজরাতের সুরাত ও রাজস্থানের সিরোহীতে মৃত পাখির নমুনায় সংক্রমণ ধরা পড়েছে। রবিবার মধ্যপ্রদেশের ঝাবুয়া জেলায় একটি মাঠে পাঁচটি ময়ুরকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্যের ১৩টি জেলায় বার্ড-ফ্লু সংক্রমণ ধরা পড়েছে। অন্যান্য জেলায় মৃত পাখির নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
ঘোষিত সাত রাজ্যের বাইরেও পাখি-মৃত্যুর খবর মিলছে। শনিবার মহারাষ্ট্রের একটি পোলট্রিতে ৯০০ মুরগির মৃত্যুর খবর মেলায় আতঙ্ক ছড়ায়। দিল্লি ও ছত্তীসগঢ়ের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক পাখি মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে তার কারণ বার্ড-ফ্লু কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। পরীক্ষাগারে নমুনাগুলি পাঠানো হয়েছে।
শনিবারই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জ্যান্ত পাখি রাজধানীতে আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। বন্ধ করা হয়েছে গাজিপুরের পোলট্রি বাজার। আপাতত ১০ দিন সেই বাজার বন্ধ থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল জানিয়েছেন, দিল্লিতে এখনও বার্ড ফ্লু-এর কোনও নিশ্চিত খবর মেলেনি। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সব রকম পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। প্রায় একই ব্যবস্থা নিয়েছে অসম সরকারও। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে বাইরে থেকে হাঁস-মুরগি ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দেশের অন্য রাজ্যগুলিতে বার্ড-ফ্লু ছড়ানো আটকাতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। আজ একটি নির্দেশিকা জারি করে সরকার জানিয়েছে, হরিয়ানার পাঁচকুলায় দু’টি পোলট্রিতে বার্ড-ফ্লু সংক্রমণ ধরা পড়ায় ৯টি ‘র্যাপিড রেসপন্স’ দল গড়েছে রাজ্য। এ দিন দেশের সমস্ত চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে নজরদারি বাড়াতে ও দৈনিক রিপোর্ট পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় পশুপালন ও দুগ্ধজাত পণ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সব রাজ্যের মুখ্যসচিব ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের প্রশাসকদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পরিস্থিতির উপরে তাঁরা যেন নজর রাখেন। পশু থেকে মানুষের শরীরে যাতে রোগ না-ছড়ায়, সে দিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। তৈরি রাখতে বলা হয়েছে যথেষ্ট পিপিই কিট। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে যাতে কোনও ভাবে গুজব না ছড়ায় সে দিকেও খেয়াল রাখতে জোর দেওয়া হয়েছে।