—ফাইল চিত্র।
এক দিকে চট্টগ্রাম বন্দরে একের পর এক জাহাজভর্তি ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের লড়াইয়ের পাশে থাকছে ভারত। তাদের জন্য হাসপাতাল বানিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে ঢাকাকে।
অন্য দিকে ভারতে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জঙ্গি তকমা দিয়ে তাদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
বিরোধীরা বলছেন, রোহিঙ্গা প্রশ্নে এই স্ববিরোধের মধ্যে দিয়ে চলছে ভারত সরকার। বিদেশ মন্ত্রক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক হাঁটছে দু’টি ভিন্ন রাস্তায়। যদিও সরকারি সূত্রের বক্তব্য, এর মধ্যে স্ববিরোধিতা নেই। এ’টি ভারসাম্যের নীতি। আবার সরকারেরই একটি অংশ ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে, স্ববিরোধিতা রয়েছে। এক দিকে বাংলাদেশের জন্য ‘ইনসানিয়াত’ কর্মসূচি, অন্য দিকে ভারতে সেই শরণার্থীদের পিছনেই নজরদারি এবং সংসদেও তাদের জঙ্গি-সংযোগের কথা তুলে ধরা।
কূটনীতিকেরা বলছেন, গোড়া থেকেই রোহিঙ্গা নিয়ে দিশাহীন নীতি নিয়ে চলেছে মোদী সরকার। বিষয়টি নিয়ে যখন বাংলাদেশ উত্তাল, তখন কর্ণপাতও করেনি নয়াদিল্লি। চিন ঢুকে পড়ার পরই নড়েচড়ে বসা হয়েছে।
বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তা অবশ্য কোনও ধোঁয়াশা দেখছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাংলাদেশ এবং মায়ানমার দু’টি দেশই নিরাপত্তার প্রশ্নে আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। আমরা যদি ওদের দেশের শরণার্থীদের সাহায্য না করি, তা হলে অন্য একটি দেশ তা করার জন্য মুখিয়ে রয়েছে।’’
অন্য রাষ্ট্রটি কে, তা মুখে না বললেও ইঙ্গিত চিনের দিকেই। ওই কর্তাই জানাচ্ছেন, এ দেশে শরণার্থীদের প্রশ্নে নিরাপত্তার দায়িত্ব ভারতেরই। যারা এত নিপীড়নের মধ্যে দিয়ে দেশছাড়া, তাদের অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। সরকার শুধু সে দিকেই নজর রাখছে। কিন্তু ভারতে শরণার্থীদের জীবনযাপনের মান উন্নত করতে কেন ‘ইনসানিয়ত’-এর মতো পদক্ষেপ করা হচ্ছে না, তার উত্তর মেলেনি সরকারের কাছ থেকে।