ফাইল চিত্র।
ওমিক্রনের ভয়কে দূরে সরিয়ে বিভিন্ন রাজ্যেই ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে স্কুল-কলেজ। স্বাভাবিক হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে পঠনপাঠন ব্যবস্থা। এই আবহে আজ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকাগুলির জন্য স্কুল খোলার প্রশ্নে নতুন করে নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্র। নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এত দিন স্কুলে পড়ুয়াদের পাঠানোর প্রশ্নে বাবা-মায়ের যে সম্মতি আবশ্যক ছিল, তা আর বাধ্যতামূলক থাকছে না। পরিবর্তিত নির্দেশিকায় বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রাজ্য বা স্থানীয় প্রশাসনের হাতে ছেড়ে দিয়েছে কেন্দ্র।
সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে এ যাবৎ স্কুলগুলিতে যে কোনও ধরনের জমায়েত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র। সংশোধিত নির্দেশে বলা হয়েছে, স্কুল বা স্থানীয় প্রশাসন চাইলে, পারস্পরিক দূরত্ব মেনে স্কুল শুরু হওয়ার আগে প্রার্থনা ফের শুরু করা যেতে পারে। এ ছাড়া যে কোনও ধরনের দল বেঁধে কাজ, যেমন খেলাধুলো, গান, নাচের মতো ক্লাসগুলি নির্দিষ্ট দূরত্বের নিয়ম মেনে পুনরায় শুরু করা যাবে। তবে যে সব পড়ুয়া ছোট থেকে কোনও ক্রনিক রোগের শিকার বা কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষাবিধি মেনে চলার উপরে নতুন নিয়মে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। এ যাবৎ পড়ুয়াদের স্কুলে আসার প্রশ্নে বাবা-মায়ের সম্মতি বাধ্যতামূলক ছিল। আজ নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন যদি মনে করে, তা হলে স্কুলগুলির ক্ষেত্রে ওই অনুমতি চাওয়া আর বাধ্যতামূলক থাকছে না।
অতীতেও পড়ুয়াদের বাসে করে স্কুলে আসার প্রশ্নে বাস বা স্কুলে আসা-যাওয়ার গাড়িকে নিয়মিত ভাবে সাফাই ও স্যানিটাইজ করার উপরে যে নির্দেশ ছিল, তা জারি থাকছে। বাসের চালক ও কনডাক্টরদের মুখে সর্বক্ষণ মাস্ক পরে থাকা ছাড়াও তাঁদের পড়ুয়াদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সংশোধিত নির্দেশে স্কুলের চালক ও কনডাক্টর যদি কনটেনমেন্ট জোনের বাসিন্দা হন, সে ক্ষেত্রে তাঁদের স্কুল আসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করার কথা বলা হয়েছে। আর হস্টেলে যে পড়ুয়ারা থাকে, তাদের প্রত্যেকের শয্যার মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে।
আজ কেন্দ্র জানিয়েছে, এই মুহূর্তে দেশের ১১টি রাজ্যে সম্পূর্ণ ভাবে স্কুল খুলে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মতো আংশিক ক্লাস শুরু হয়েছে ১৬টি রাজ্যে। আর ভোটমুখী পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশের মতো ৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এখনও সব ক্লাস বন্ধ রয়েছে। শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের ৯০ শতাংশের বেশি টিকাকরণ হয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ রাজ্যকেই স্কুল খোলার প্রশ্নে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল বলেন, ‘‘তিন-চারটি ছাড়া অধিকাংশ রাজ্যেই শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের টিকাকরণ ৯০ শতাংশ ছাপিয়ে গিয়েছে। কিছু রাজ্যে ১০০ শতাংশ টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে।’’ পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের টিকাকরণ হয়েছে যথাক্রমে ৯৯.৩৪ শতাংশ ও ৯৫.৫৭ শতাংশ।