প্রতীকী ছবি।
ভোট আসতেই প্রচারের সব মাধ্যমকে সব রকম ভাবে ব্যবহার করা শুরু করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেটা করতে গিয়ে বিজেপি পরিচালিত ‘নমো-অ্যাপ’-এর মাধ্যমে আজ আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে ওই কর্মীদের নামিয়ে দিলেন ‘মোদী-কেয়ার’-এর প্রচারের কাজে। দূরদর্শনে সরাসরি সম্প্রচারিত হল বিজেপির ‘নমো-অ্যাপ’-এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিয়ো বক্তৃতা, যেখানে এই ঘোষণা করলেন তিনি।
আজকের এই ভিডিয়ো বক্তৃতার প্রচারের কথা গত কালই নিজের টুইটে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেটি যে দূরদর্শনে দেখানো হবে, সেটিও জানান তিনি। এ দিন প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ধরে বিভিন্ন রাজ্যের আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পরে সবার শেষে করলেন ভাতা বাড়ানোর ঘোষণাটি। বললেন, আশা কর্মীদের উৎসাহ-ভাতায় কেন্দ্রের অংশ দ্বিগুণ করে দেওয়া হল। এর সঙ্গে দু’টি সরকারি বিমা প্রকল্পে তাঁদের পরিবারের জন্য মোট ৪ লক্ষ টাকা বিমার সুবিধাও থাকবে, যার প্রিমিয়াম দেবে কেন্দ্র সরকার। একই সঙ্গে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও তাঁদের সহায়কদের সাম্মানিক ভাতাও বাড়ানো হল। যাঁরা ৩ হাজার টাকা পান, এখন তাঁরা পাবেন সাড়ে ৪ হাজার টাকা করে। ২২০০ টাকা যাঁরা পান, তাঁদের ভাতা বেড়ে ৩৫০০ টাকা এবং ১৫০০ টাকা ভাতা বেড়ে হল ২২৫০ টাকা। এর সঙ্গেই কাজের ভিত্তিতে অতিরিক্ত ২৫০-৫০০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগামী মাস থেকেই এই বর্ধিত টাকা পাওয়া শুরু হয়ে যাবে। যার ফলে ১ নভেম্বর হাতে আসা টাকা দিয়ে দীপাবলি ধুমধাম করে পালন করতে পারবেন সকলে।’’ এ পর্যন্ত তা-ও ঠিক ছিল। কিন্তু এর সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী এঁদের হাতে তুলে দিলেন তাঁর ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের প্রচারের দায়িত্ব। ঘরে ঘরে গিয়ে প্রকল্পটি নিয়ে প্রচার করতে হবে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। আরএসএস-এর শ্রমিক সংগঠন বিএমএস এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। বিজেপির বক্তব্য, এর ফলে প্রায় ৩৯ লক্ষ আশা-অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী উপকৃত হবেন। ভোটেও তার সুফল মিলবে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পটিকে বিজেপি ইতিমধ্যেই ‘মোদী-কেয়ার’ নাম দিয়ে প্রচার করতে শুরু করেছে। দলের সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, ঘরে ঘরে গিয়ে ‘মোদী-কেয়ার’-এর প্রচার করতে। তার উপর খোদ প্রধানমন্ত্রী তা নিয়ে প্রচারে নামার নির্দেশ দেওয়ার পরে আসরে নেমেছে বিরোধীরা। কংগ্রেসের অভিযোগ, এত দিন ‘নমো-অ্যাপ’ নিয়ে প্রশ্ন তুললে বিজেপি বলত, সেটি নাকি দল চালায়। সেই দলের অ্যাপে প্রধানমন্ত্রী সরকারি ঘোষণা করলেন! আর অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ভোট টানার জন্য কাজে লাগাচ্ছেন! বিরোধীদের অভিযোগ, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ভাতা সমস্যা অনেক দিনের। প্রধানমন্ত্রী আজ তার কিছুটা বাড়িয়ে কর্মীদের ভোট প্রচারে কাজে লাগাতে চাইছেন বলে ক্ষুব্ধ বিরোধীরা।