জবাই করতে কেনাবেচা নয় গবাদি পশু, জানাল কেন্দ্র

এই নির্দেশিকার ফলে, অল ইন্ডিয়া মিট অ্যান্ড লাইভস্টক এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব বি ডি সবরবালের দাবি, দেশের মাংস ব্যবসা ভয়ঙ্কর ক্ষতির মুখে পড়বে। তাঁর দাবি, কসাইখানাগুলি ৯০ শতাংশ গবাদি পশুই কেনে বাজার থেকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ০৩:৫৯
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

শুধু গরু নয়, এ বার একেবারে গবাদি পশু। গো-রক্ষা এবং গোমাংস নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই কেন্দ্র এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিল, দেশের হাটে-বাজারে এ বার থেকে কোনও গবাদি পশুই জবাইয়ের উদ্দেশ্যে কেনাবেচা করা যাবে না। গবাদি পশুর সংজ্ঞা অনুযায়ী, গরু, বাছুর, বলদ, ষাঁড়, মোষ এবং উট।

Advertisement

এই নির্দেশিকার ফলে, অল ইন্ডিয়া মিট অ্যান্ড লাইভস্টক এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব বি ডি সবরবালের দাবি, দেশের মাংস ব্যবসা ভয়ঙ্কর ক্ষতির মুখে পড়বে। তাঁর দাবি, কসাইখানাগুলি ৯০ শতাংশ গবাদি পশুই কেনে বাজার থেকে। অনেকের মতে, মাংস ব্যবসায় জড়িত বৃহৎ সংস্থাগুলি হয়তো পরিস্থিতি সামলে নেবে। মার খাবেন ছোট ব্যবসায়ীরা এবং মাংস কিনতে মুশকিলে পড়বেন গরিব মানুষ। আঁচ পড়বে চর্মশিল্পে।

যদিও সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, মাংস কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা আনা সরকারের উদ্দেশ্য নয়। নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পশুপালকদের কাছ থেকে মাংসের জন্য পশু কেনা যাবে। কিন্তু হাটে-বাজারে গবাদি পশু কিনে জবাই করা চলবে না। অসুস্থ বা অক্ষম গরু বেচাও কঠিন হবে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের তরফে মঙ্গলবারের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কৃষির প্রয়োজন ছাড়া গবাদি পশু বাজার থেকে কেনাবেচা করা যাবে না। এখন থেকে ক্রেতাকে প্রমাণ দিতে হবে তিনি কৃষিজীবী, কৃষির প্রয়োজনে পশু কিনছেন। এবং বিক্রেতাকে লিখিত ভাবে জানাতে হবে, জবাইয়ের জন্য পশুটিকে বিক্রি করা হচ্ছে না। ক্রেতা এবং বিক্রেতা দু’জনকেই তাঁদের সচিত্র পরিচয়পত্র দিতে হবে। পশু বাজারের আধিকারিকরা সেগুলি খতিয়ে দেখে তবে অনুমোদন দেবেন।

আরও পড়ুন:বিকল্প প্রার্থীও ভাবনায় আছে বিরোধীদের

বাজার বসার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এত দিন পর্যন্ত বেশির ভাগ রাজ্যেই এ ধরনের বহু বাজার বসত সীমানা এলাকায়, যাতে পড়শি রাজ্যের লোকেরাও তাতে অংশ নিতে পারেন। নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দুই রাজ্যের সীমানা থেকে ২৫ কিলোমিটার এবং সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে পশুর বাজার বসাতে হবে। সীমান্তে পশুপাচার ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্যে ‘বেআইনি’ মাংসের দোকান বন্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। পরের ধাপে কেন্দ্রের এই নির্দেশিকা দেশজুড়ে গবাদি পশু ব্যবসাকেই নজরদারির আওতায় আনল। এত দিন দেশ জুড়ে বিতর্ক চলছিল গোমাংস এবং গোহত্যা নিয়ে। এ বার সামগ্রিক ভাবে গবাদি পশুই বিতর্কের কেন্দ্রে চলে এল।

নতুন নির্দেশিকাকে কটাক্ষ করে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের টুইট, ‘‘কার্যত গবাদি পশুহত্যা যে ভাবে আটকানো হচ্ছে, তাতে বহু মানুষের খাবারে টান পড়বে। এটা বহুত্ববাদের উপরে হামলা।’’ যদিও বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মুরলীধর রাওয়ের কথায়, ‘‘এই আইন ভারতীয় আত্মা ও সংস্কৃতির অনুরূপ। পশুধনকে মাংস হিসেবে দেখার বিকৃতি এর ফলে দূর হবে।’’ কংগ্রেস নেতা শশী তারুর জবাবে মনে করান, ‘‘গাঁধীজি কিন্তু নিজের দৃষ্টিভঙ্গি অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধী ছিলেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement