—প্রতীকী চিত্র।
রাজধানীর দুই প্রাচীন পুজো ঘিরে প্রবাসী উদ্দীপনার শেষ নেই। করোলবাগ পুজো সমিতি এ বার পা দিল ৮৩ বছরে। আর মিন্টো রোড পুজো কমিটির বয়স হল ৮৪। এই দুই দুর্গোৎসবের প্রধান সম্পদ ঐতিহ্য। আকর্ষণ, আধুনিকতার মিশেল, ঐক্যের আবহ।
মিন্টো রোড, পুজা সমিতির পুজোয় সাবেকি প্রতিমা দর্শনে মন জুড়িয়ে যায়। সকাল থেকে চলছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কাজের দিনেও বাঙালি অবাঙালি নির্বিশেষে লাইন দিয়ে ঢুকছেন এখানের ঐতিহ্যে শামিল হতে। স্থায়ী কালীমন্দিরের এক পাশে দুর্গার মণ্ডপ, অন্য পাশের বিস্তৃত জমিতে বিভিন্ন স্টলে হইহই করে ব্যবসা করছে কলকাতার ঘুগনি, কুলফি মালাই, কচুরি, লুচি। তেমনই চিকেন মাটন কাবাব, কোর্মা বিক্রির চাপে মাথা তুলতে পারছেন না পুরনো দিল্লি থেকে আসা কলিমুদ্দিম মিঞারা। অসহিষ্ণুতার বহু তিক্ত উদাহরণ রাজধানী সাম্প্রতিক অতীতে দেখেছে। তারই মধ্যে জিভে জল আনা এই স্বাদু দৃশ্য, বিশ্বাস ফিরিয়ে দেয়। দশপ্রহরণধারিণী পারেন এ ভাবে বিভেদ ঘুচিয়ে মানুষকে মিলিয়ে দিতে।
করোলবাগের পুজোয় এ বার থিমহীনতার স্বস্তি, সাবেকিয়ানার উদ্যাপন। সেই সঙ্গে পুজো কমিটি সামাজিক ব্রতে ঋজু। পুজোর পুঁজি থেকেই মেদিনীপুর, হুগলিতে পাঠানো হয়েছে বন্যাত্রাণ। চলছে রক্তদান শিবির, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, কম্বল ও বস্ত্র বিতরণ। বাচ্চারা গান গাইছে, ছবি আঁকায় মাতছে প্রাঙ্গণে। পুজোর ভোগে যত্ন করে দর্শনার্থীদের জন্য পরিবেশন করা হচ্ছে খিচুড়ি, লুচি, পাঁচ তরকারি, চাটনি, ক্ষীর, পাঁপড়, লাবড়া। সাধারণ সম্পাদক দীপক ভৌমিকের কথায়, ‘‘সেই ভয়ংকর অতিমারির সময়েও আমরা মা দুর্গার প্যান্ডেলে সলতে জ্বালিয়ে রেখেছিলাম কোনও মতে। আজ সবাইকে উৎসবে পেয়ে খুবই আনন্দ হচ্ছে।’’