প্রতীকী ছবি।
বাবা না মা! বিবাহবিচ্ছেদের পর সন্তানের দায়িত্ব কে পাবেন, তা নিয়ে মামলা গড়াল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই অবধি। শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই ঘটেছে কেরলের এক দম্পতির মামলার ক্ষেত্রে।
২০১১ সালে কেরলের এর্নাকুলামের মহিলা জিভা সন্তোষকে বিয়ে করেন অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা নোমি জোপেন। তবে ২০১৮ সালে সেই বিয়ে ভেঙে যায়। এর পরই তাঁদের কন্যা বেথশেভার দায়িত্ব কে পাবেন, তা নিয়ে আইনি লড়াই শুরু হয় দম্পতির। তবে মা সন্তোষকে সন্তানের হেফাজত দেয়নি এর্নাকুলামের একটি আদালত।
এর পর ২০২২ সালে কেরল হাইকোর্টে একটি নথি জমা দিয়ে সন্তোষ দাবি করেন, অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সার্কিট আদালত মেয়ের স্থায়ী হেফাজত তাঁকে মঞ্জুর করেছেন। এ-ও দাবি করেন, ২০১৭ সালে তাঁর প্রাক্তন স্বামী নোমি এই মামলা করেছিলেন এবং আদালত উভয় পক্ষের কথা শুনেছিল। সেই ভিত্তিতেই অস্ট্রেলিয়ায় ওই আদালত এই রায় দিয়েছে।
তবে কেরল হাই কোর্টে জমা দেওয়া সন্তোষের এই নথি দেখে হতবাক হয়ে যান নোমি। তাঁর দাবি ছিল, তিনি এ রকম কোনও মামলা করেননি। সন্তোষের জমা দেওয়া ওই নথি জাল বলেও দাবি করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার আদালতের রায় আসল কি না তা যাচাই করার জন্য বিদেশ মন্ত্রককে খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দেয় কেরল হাই কোর্ট। বিদেশ মন্ত্রক অস্ট্রেলিয়ার সরকারকে চিঠি দিয়ে জানতে পারে, কেরলের আদালতে সন্তোষ যে নথি জমা দিয়েছেন, তা ভুয়ো। ভুয়ো নথি জমা করার অভিযোগে সন্তোষকে ৫০ হাজার টাকার জরিমানা করে কেরলের উচ্চ আদালত।
তবে এখানেই থেমে যায়নি সেই মামলা। নোমি তাঁর স্ত্রী সন্তোষের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনে বিভিন্ন ধারায় এফআইআর দায়েরের অনুমতি চেয়েছেন। অন্য দিকে, হাই কোর্টের আদেশ অমান্য করেই দেশ ছেড়ে অস্ট্রেলিয়া চলে গিয়েছেন সন্তোষ। সন্তোষের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে তাঁকে যেন ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়, সেই আর্জিও আদালতে জানিয়েছেন নোমি। এর পরই আদালতের নির্দেশে দম্পতির মামলায় তদন্তভার পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ায় বসবাসকারী সন্তোষের বিরুদ্ধে সিবিআই ইতিমধ্যেই এফআইআর দায়ের করেছে।