—ফাইল চিত্র
সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষার (নিট-ইউজি) প্রশ্নপত্র ফাঁসকাণ্ডে প্রথম চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, চার্জশিটে মোট ১৩ জনের নাম রয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে মোট ছ’টি ধারায়।
প্রশ্ন ফাঁসকাণ্ডে গত ৫ মে প্রথম অভিযোগ দায়ের হয়েছিল পটনার শাস্ত্রীনগর থানায়। পরে ২৩ জুনে মামলা যায় সিবিআইয়ের হাতে। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ে আধুনিক ফরেন্সিক কৌশল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সিসিটিভি ফুটেজ ও টাওয়ার লোকেশন বিশ্লেষণের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা এখনও পর্যন্ত ৫৮টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৪০ জনকে। তার মধ্যে ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে বিহার পুলিশ। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এখন সিবিআই বা বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। তদন্ত সম্পূর্ণ হলে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা করা হবে।
সিবিআই আগেই জানিয়েছিল, নিট-ইউজির পরীক্ষার দিন, অর্থাৎ ৫ মে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগের ওয়েসিস স্কুল থেকে। ঘটনাচক্রে, হাজারিবাগের নিট পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি এই স্কুল। প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার পর থেকেই এই স্কুলের নাম উঠে এসেছিল। স্কুলে অধ্যক্ষ, সহ-অধ্যক্ষ এবং এক কর্মীকে আগেই গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, নিটের বেশ কিছু আধপোড়া প্রশ্নপত্র উদ্ধার করেছিল তারা। সেই প্রশ্নপত্র খতিয়ে দেখার পর ঠিক কোন কেন্দ্র থেকে ফাঁস হয়েছিল, তা চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, পঙ্কজ কুমার ওরফে আদিত্য ওরফে সাহিল নামে এক যুবকের সঙ্গে মিলিত ভাবে ওয়েসিস স্কুলের অধ্যক্ষ, সহ-অধ্যক্ষ এবং এক কর্মী প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ। যে বাক্সের মধ্যে নিটের প্রশ্নপত্র স্কুলে এসেছিল, সেটিকে কন্ট্রোল রুমে রাখা হয়েছিল। ধৃতদের জেরা করে সিবিআই জানতে পেরেছে যে, সেই বাক্স স্কুলে আসার পরই পঙ্কজ কুমারকে ওই কন্ট্রোল রুমে প্রবেশ করার অনুমতি দেন অধ্যক্ষ এবং সহ-অধ্যক্ষ।
সিবিআই জানিয়েছে, সেই বাক্স খোলার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করেছিলেন অভিযুক্তেরা। সেই বাক্স থেকে কিছু প্রশ্নপত্র বার করে নেওয়া হয়েছিল। তার পর সেগুলি সমাধান করার জন্য হাজারিবাগের বেশ কিছু ডাক্তারি পড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেই প্রশ্নপত্র তাঁদের দিয়ে সমাধান (সলভার) করানো হয়। সেই উত্তরপত্র তার পর লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিট পরীক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করা হয়। এই কাণ্ডে জড়িত সেই সব ‘সলভার’-এর বেশির ভাগকেই গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তবে কোন কোন পরীক্ষার্থীর কাছে সেই সমাধানপত্র পৌঁছেছিল, সেই সব পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে বলে খবর সিবিআই সূত্রে।