সরব: রাহুল গাঁধী। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই
রবিবার রাতেই কৈলাস যাত্রা সেরে দিল্লি ফিরেছেন। সোমবার সকাল ৮টাতেই পৌঁছে গেলেন রাজঘাটে। পেট্রল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ধর্নায় বসলেন একটি পেট্রল পাম্পের সামনে। সেখান থেকে ১৬টি বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে মিছিল করে পৌঁছলেন রামলীলা ময়দানে।
তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদের মঞ্চ থেকেই ফের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের এক জোট হওয়ার ডাক দিলেন রাহুল গাঁধী। বিরোধী নেতাদের পাশে নিয়ে কংগ্রেস সভাপতির দাবি, ‘‘আমরা একসঙ্গে মিলে বিজেপি-কে হারাতে চলেছি। আমজনতার মনে যে যন্ত্রণা, তা আমাদের সকলের মনে রয়েছে। নরেন্দ্র মোদী বা বিজেপি নেতাদের মধ্যে অবশ্য নেই। কথা দিচ্ছি, আমরা একসঙ্গে মিলে বিজেপি-কে হারানোর কাজ করব।’’
তেলের দাম নিয়ে মোদীর নীরবতাকে নিশানা করে রাহুলের মন্তব্য, ‘‘কে জানে উনি কোন দুনিয়ায় থাকেন। গোটা দেশ ওঁকে দেখে বিরক্ত। ভোটের আগে মোদীজি পুরো দেশে ঘুরতেন আর তেলের দাম বাড়ার কথা বলতেন। এখন একটা কথাও বলেন না। সত্তর বছরে টাকা এত দুর্বল হয়নি। গ্যাসের দাম ৪০০ থেকে বেড়ে ৮০০ টাকা হয়েছে। কৃষক-তরুণ প্রজন্ম রোজগারের সমস্যা শুনতে চান, তা নিয়েও মুখ খোলেন না।’’ রাফাল নিয়েও মোদীকে নিশানা করে রাহুল বলেন, ‘‘কৃষকের ঋণ মকুব করেন না। কিন্তু এক বন্ধুকে ৪৫ হাজার কোটি টাকার উপহার দেন।’’
সনিয়াও ছিলেন প্রতিবাদের মঞ্চে। তবে মুখ খোলেননি। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বিরোধী দলগুলিকে নিজেদের ছোটখাটো বিবাদ পিছনে ফেলে এগোনোর ডাক দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, ‘‘এত বড় মাত্রায় যখন বিরোধীরা এককাট্টা, তখন তার পুরো ফায়দা তুলতে পদক্ষেপ করতে হবে। মোদী সরকার সব সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। এই সরকার বদলের সময় এসেছে। এখন সব দলকে পুরনো বিবাদ ভুলে, ছোট ছোট বিষয় পিছনে ফেলে, গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে।’’
বহু দিন বাদে কংগ্রেস ভারত বন্ধ ডাকল। তবে হাতে গোনা কয়েকটি রাজ্য ছাড়া কোথাও তার বিশেষ প্রভাব পড়েনি। তা দেখে কংগ্রেসের নেতারাও বুঝতে পারছেন, বন্ধ-হরতাল এখন সফল হওয়া মুশকিল। যদিও প্রকাশ্যে তাঁদের দাবি, প্রতিবাদে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে।
রাফাল নিয়ে সব দল এখনও সরব হয়নি। কিন্তু তেলের দাম সব বিরোধী দলকেই এক মঞ্চে হাজির করেছে। কংগ্রেসের দাবি, ২১টি বিরোধী দল বন্ধকে সমর্থন করেছে। এর মধ্যে ১৬টি দলের নেতারা রাজঘাট ও রামলীলা ময়দানের মঞ্চে হাজির ছিলেন। বামেরা যন্তর-মন্তরে আলাদা বিক্ষোভ দেখানোয় রাজঘাট-রামলীলায় যাননি। ছিলেন না এসপি-বিএসপি নেতারাও। তবে প্রধানমন্ত্রীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসী থেকে শুরু করে গোটা উত্তরপ্রদেশে তারা এসপি-বিএসপি-র সঙ্গে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বলে কংগ্রেসের দাবি।