হাই কোর্টে বিশৃঙ্খলার রিপোর্ট জমা দিতে হবে মঙ্গলবারের মধ্যেই। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
কলকাতা হাই কোর্টে আইনজীবীদের বিক্ষোভকে ‘অভব্যতা’ বলে মন্তব্য করল ‘বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’। দিল্লিতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে বারের প্রতিনিধিরা বলেছেন, ‘‘যে ভাবে এক জন বিচারপতির বিরোধিতা করতে গিয়ে পুরো বিচারপ্রক্রিয়াকে ভেঙে তছনছ করা হয়েছে, তা অন্তত আইনজীবীদের শোভা পায় না।’’ এ ব্যাপারে ভারতীয় বার কাউন্সিলের কাছে কলকাতা থেকে একটি রিপোর্ট গিয়েছিল। বারের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বার এই ধরনের ঘটনা সহ্য করবে না। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুক্রবারই দিল্লি থেকে একটি প্রতিনিধিদল আসছে কলকাতায়। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ভারতীয় বার কাউন্সিল।
গত সোমবার থেকে ঘটনার সূত্রপাত। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছিলেন আইনজীবীদের একাংশ। পরে বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটের প্রস্তাবও আনেন বার কাউন্সিলের কলকাতা শাখার সদস্যদের কয়েকজন। চলতে থাকে এজলাসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ। থমকে যায় বহু মামলার শুনানিও। এমনকি, হাই কোর্ট চত্বরে আইনজীবীদের দু’টি দলের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও দেখা যায়। বৃহস্পতিবার সেই প্রসঙ্গেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আইনজীবীদের কেন্দ্রীয় সংগঠন ভারতীয় বার কাউন্সিল। বারের তরফে মননকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘গত কয়েকদিনে যা হয়েছে, আমরা দেখেছি। কলকাতার বার কাউন্সিলের তরফে আমরা একটি আবেদনও পেয়েছি। যা ঘটেছে তা এককথায় অভব্যতা। আমরা মনে করি যাঁরা এ সব করেছেন, তাঁদের প্র্যাকটিস করার অনুমতি পাওয়া উচিত নয়। আরও দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হল, যে বার কাউন্সিল আইনজীবীদের শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে শেখায়, ভদ্র, বিনয়ী এবং সংযত আচরণ করতে শেখায়, তারই সদস্যরা এমন করেছেন।’’
কলকাতা হাই কোর্টে ইতিমধ্যেই আইনজীবীদের বিক্ষোভের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালত অবমানার রুল জারি করেন বিচারপতি মান্থা। যার জেরে মামলাও হয়েছে। এ বার বার কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় নেতারা জানালেন, তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে খতিয়ে দেখে বিক্ষোভকারীদের নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। মননকুমার বলেন, ‘‘বার এই ধরনের বিশৃঙ্খলাসৃষ্টিকারীদের পছন্দ করে না। তাই দিল্লি থেকে ৩ সদস্যের একটি কমিটি যাবে। তারাই বারের অন্যান্য সদস্য, বারের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবে। এমনকি, কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের সঙ্গেও কথা বলবে।’’ মঙ্গলবারের মধ্যে কলকাতা হাই কোর্টের ঘটনায় রিপোর্ট জমা দেবে এই তিন সদস্যদের দল। ভারতীয় বার কাউন্সিল সিদ্ধান্ত জানাবে বুধবার। তবে প্রয়োজন পড়লে এই রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টেও যেতে পারে বলে জানিয়েছে বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া।