—ফাইল চিত্র।
খুব শীঘ্রই মোদী সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদল ও সম্প্রসারণ হতে চলেছে। দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে তেমনই গুঞ্জন। সরকারি সূত্রের খবর, গত দু’মাস ধরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ বিষয়ে বিভিন্ন স্তরে আলোচনা শুরু করেছেন। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ এসে পড়ায় এত দিন মন্ত্রিসভার রদবদল করা সম্ভব হয়নি। এখন সংক্রমণ, মৃত্যুর হার কিছুটা কমতে শুরু করায় ওই রদবদল সেরে ফেলার কথা ভাবা হচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে প্রধানমন্ত্রী অন্তত পাঁচ জন মন্ত্রীর কাজের রেকর্ড খতিয়ে দেখেছেন। বাকিদেরও রিপোর্ট কার্ড ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, গত এক বছর অতিমারির জন্য কার্যত কোনও কাজই করা যায়নি। এ বার কাজে নেমে তৃণমূল স্তরে যেখানে যা সমস্যা রয়েছে, তা সমাধান করতে হবে।
কোভিডের প্রকোপ কিছুটা কমলেও খোদ প্রধানমন্ত্রীর দিকেই কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগে আঙুল উঠেছে। অন্য দিকে রাজনৈতিক স্তরে পশ্চিমবঙ্গের ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পরে বিজেপির সামনে আগামী বছর উত্তরপ্রদেশের ভোট বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। ফলে উত্তরপ্রদেশেও যোগী আদিত্যনাথের সরকারের মন্ত্রিসভা ও সংগঠনে রদবদল হবে। বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা, কেন্দ্র ও লখনউয়ের মধ্যে সমন্বয় রেখেই দুই মন্ত্রিসভায় রদবদল হবে।
বাংলায় বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির সাংসদদের কাউকে মন্ত্রী করা হবে কি না, তা নিয়ে প্রবল জল্পনা ছিল। ভোটে হেরে যাওয়ার পরে বঙ্গ বিজেপিতে ভাঙন রুখতে, দলের নেতাদের মনোবল বাড়াতে নিশীথ প্রামাণিকের মতো কাউকে মন্ত্রিসভায় আনা হবে কি না, বা বাংলা থেকে দুই প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে কাউকে ক্যাবিনেটে আনা হবে কি না, তা নিয়েও জল্পনা চলছে। নিশীথ, সৌমিত্র খাঁ, অর্জুন সিংহরা গত দু’তিনদিন ধরে দিল্লিতেই ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগীর বৈঠক হয়েছে গতকালই। তারপরে মোদী অমিত শাহ, জে পি নড্ডার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। এর আগে নড্ডা ও বিজেপির সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গেও মোদী বৈঠক করেছেন। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে পঞ্জাব-হিমাচল-উত্তরাখণ্ড-গুজরাতের মতো যে সব রাজ্যে ভোট রয়েছে, সেখানকার জাতপাতের সমীকরণ মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্ভাব্য রদবদল নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
উত্তরপ্রদেশেও যোগী সরকারের বিরুদ্ধে কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ ও মোদী-যোগী শিবিরের মধ্যে টানাপোড়েনের জেরে বিজেপি স্বস্তিতে নেই। এই সুযোগে রাজ্যে বিজেপির শরিক আপনা দল, নিষাদ পার্টি অমিত শাহর কাছে নিজেদের ভাগ দাবি করেছে। বিহারে নীতীশ কুমারের জেডি-ইউ-র সঙ্গে বিজেপির জোট সরকার চললেও, কেন্দ্রে মোদী সরকারের মন্ত্রিসভায় জেডি-ইউ-র কোনও মন্ত্রী নেই। জেডি-ইউ সভাপতি আরসিপি সিংহ আজ দাবি তুলেছেন, তাঁদেরও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা চাই। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে আসা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়ার আশায় বসে রয়েছেন।
মোদী সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে গত দুই বছরে বিজেপির দুই পুরনো শরিক, শিবসেনা ও শিরোমণি অকালি দল এনডিএ ত্যাগ করেছে। আর এক শরিক এলজেপি-র প্রধান রামবিলাস পাসোয়ান মারা গিয়েছেন। তাঁদের হাতে থাকা মন্ত্রক বিজেপির মন্ত্রীদের মধ্যেই ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বহু মন্ত্রীর হাতেই একাধিক মন্ত্রক রয়েছে। মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্য থেকে মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর ভাবনা চলছে।