অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য পেনশন-মলমের দাওয়াই দিল কেন্দ্র।
আত্মহত্যা আর লং মার্চ-এর জোড়া ধাক্কার পর কৃষকদের জন্য আশু এবং সরাসরি মাসিক সহায়তার বন্দোবস্ত। কিন্তু নোটবন্দিতে ক্ষতিগ্রস্ত অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য পেনশন-মলমের দাওয়াই দিল কেন্দ্র।
ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানালেন, ১৮ বছরে কেউ যদি এই প্রকল্পে যোগ দেন, মাসে মাত্র ৫৫ টাকা করে দিতে হবে। তাহলে ৬০ বছর পেরিয়ে মাসিক ৩,০০০ টাকা করে পেনশন পাবেন তাঁরা। ২৯ বছর বয়সে প্রকল্পে শামিল হলে লাগবে ১০০ টাকা। সব ক্ষেত্রেই সম পরিমাণ অঙ্ক যাবে কেন্দ্রের কোষাগার থেকে। একেই এই ক্ষেত্রে চাকরির নিশ্চয়তা নেই। ফলে নিশ্চিত আয়ের জন্য তাঁদের ৬০ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করানো কতটা যুক্তিযুক্ত, চাকরি না থাকলে মাসে মাসে কী করে তাঁরা টাকা দেবেন, কিছুদিন টাকা দেওয়ার পরে আর দিতে না পারলে কী হবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। পীযূষ জবাবের ধারেকাছে যাননি।
নোটবন্দিতে অসংগঠিত ক্ষেত্রই যে সব থেকে বেশি মার খেয়েছে, সে কথা গোড়াতেই বলেছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। একই আশঙ্কা বারবার প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও। মোদী সরকার মানেনি। যদিও ভোটের মুখে অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের ক্ষোভ টের পেয়ে শেষে পেনশন প্রকল্প ঘোষণা করতে হল তাদের। পীযূষ দাবি করলেন, জিডিপির অর্ধেকই আসে অসংগঠিত ক্ষেত্রের ৪২ কোটি কর্মীর দৌলতে। ফলে এই পদক্ষেপ।
বিরোধীরা বলছেন, সরকার অসংগঠিত ক্ষেত্রে সামাজিক সুরক্ষা দিতে চাইছে, ভাল কথা। কিন্তু এত বড় প্রকল্পে বরাদ্দ মাত্র ৫০০ কোটি! আর এত দেরিতে? তাঁদের কটাক্ষ, ভোটের বাজারে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়া সরকার যে এই প্রকল্পকে গুরুত্ব দেয়নি, তা স্পষ্ট। আজ ‘প্রধানমন্ত্রী মানধন প্রকল্প’ ঘোষণার সময়ে পীযূষ কোনও প্রশ্ন বা সংশয় নিরসনের পথে হাঁটেননি। বরং গত সাড়ে চার বছরে এ ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য তাঁরা কী কী করেছেন, তার লম্বা ফিরিস্তি দিয়েছেন। কর্মীদের বোনাস থেকে গ্র্যাচুইটি পাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা বৃদ্ধি— টেনে এনেছেন সব কিছুই। বিরোধীরা বলছেন, ওই তো! সবই ভোট-লীলা।