সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল গাঁধী। পাশে শরদ পওয়ার এবং চন্দ্রবাবু নায়ডু। দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে। ছবি: পিটিআই।
আর দু’-তিন মাসের মধ্যেই ফের ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ শুরু হয়ে যাবে! এ বারেরটা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। নয়াদিল্লিতে বিরোধী দলগুলির নেতাদের মঞ্চ থেকে আজ এমন হুঙ্কারই দিলেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সভাপতির কথায়, ‘‘নোট বাতিল, জিএসটি, কৃষিসঙ্কট, কর্মসংস্থানের অভাবের মতো বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। আর সবচেয়ে আগে রয়েছে দুর্নীতি। আর দু’-তিন মাসের মধ্যেই সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের সার্জিকাল স্ট্রাইক শুরু হবে।’’
‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’-এর জন্য কোন কোন অস্ত্র রয়েছে তাঁর ভাণ্ডারে?
তা-ও এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাহুল। লোকসভা ভোটে বিরোধীদের প্রচারের বিষয়গুলি চিহ্নিত করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কৃষিক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থ বিজেপি সরকার। পাশাপাশি, তারা সাংবিধানিক সংস্থাগুলিকে একের পর এক আঘাত করে চলেছে। বেকারত্ব গত ৪৫ বছরের মধ্যে শীর্ষ মাত্রা ছুঁয়েছে। আর এই সবের সঙ্গে রয়েছে দুর্নীতি। তিরিশ হাজার কোটি টাকা সরাসরি অনিল অম্বানীকে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টও (বর্তমানে প্রাক্তন) বলেছেন যে, অম্বানীকেই বরাত দিতে বলা হয়েছিল।’’ এরই সঙ্গে ইভিএম নিয়েও বিরোধীদের সম্মিলিত দাবি ও কর্মসূচির কথা সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন রাহুল।
ব্রিগেডে গত উনিশ জানুয়ারির বিরোধী সমাবেশে রাহুল ছিলেন না। প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন মল্লিকার্জুন খড়্গে। ইভিএম কারচুপির প্রসঙ্গ উঠেছিল ওই সমাবেশে। সেখানেই চার জনের ‘খসড়া কমিটি’ তৈরি হয়। তারা প্রাথমিক ভাবে চার পাতার একটি খসড়া রিপোর্ট তৈরি করেছে। রাহুল আজ দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে চন্দ্রবাবু নায়ডু, শরদ পওয়ার, ডেরেক ও’ব্রায়েন, কানিমোঝি, মহম্মদ সেলিম, শরদ যাদব-সহ মোট একুশটি বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। সেখানে ইভিএম নিয়ে আলোচনার পরে অন্যান্য নেতাকে পাশে বসিয়ে কংগ্রেস সভাপতি সংক্ষিপ্ত সাংবাদিক বৈঠক করেন।
রাহুলের কথায়, ‘‘ইভিএমের বিষয়টি নিয়ে আমাদের আপত্তির জায়গা রয়েছে। আজ তা নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। আমরা একটি রিপোর্ট তৈরি করেছি, যা নিয়ে সোমবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের কাছে যাওয়া হবে।’’ বিরোধীদের দাবি মেনে ব্যালটে ফিরতে যে কমিশন রাজি নয়, তা তারা বারবারই বলে চলেছে। তবে বিরোধী চাপের মুখে কমিশন গত ২২ জানুয়ারি ঘোষণা করেছে, লোকসভা ভোটে এ বার সব ইভিএমের সঙ্গেই ‘ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেল’ বা ‘ভিভিপ্যাট’ যন্ত্র লাগানো হবে। তাতেই বোঝা যাবে ভোট ঠিক মতো পড়েছে কি না। এ ক্ষেত্রে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের দাবি, গণনার সময় ২-৩ শতাংশ নয় অন্তত ৫০ শতাংশ ভোট ভিভিপ্যাটের সঙ্গে মেলাতে হবে।