নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
গরিবের ভোট টানতে পীযূষ গয়াল তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, দেশের সম্পদে গরিবদেরই প্রথম অধিকার। ঘাম ঝরিয়ে ফসল ফলানো চাষিদের জন্য সরকারি কোষাগার থেকে টাকা দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন তিনি।
গ্রাম-গরিবের মন জেতার লক্ষ্যে তৈরি সেই বাজেটের নথিই বলছে, গ্রাম ও গরিবের জন্য বরাদ্দ অর্থ আসলে কমিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী! প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা হোক গ্রামীণ সড়ক যোজনা— সব ক্ষেত্রেই চলতি অর্থ বছরের শুরুতে যে বরাদ্দ হয়েছিল, বছরের শেষে সেই খরচ ছাঁটাই হয়েছে। মুখে চাষিদের উন্নয়নের কথা বললেও কৃষি সেচ যোজনায় খরচ কমানো হয়েছে। এমনকি মিড-ডে মিল এবং গ্রামে পানীয় জলের প্রকল্পের বরাদ্দেও হাত পড়েছে। বঞ্চিত হয়েছে গ্রামে শৌচালয় তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের স্বচ্ছ ভারত।
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের অভিযোগ, আসলে মোদী সরকারের রাজস্ব আয় আশানরূপ হয়নি। তাই রাজকোষ ঘাটতি যাতে খুব বেশি লাগামের বাইরে চলে না যায়, তাই খরচ ছাঁটাই করতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: তেলতুম্বের গ্রেফতারিতে মুখ পুড়ল সরকারের
একশো দিনের কাজ বা মনরেগা-তেও যথেষ্ট বরাদ্দ হয়নি বলে অভিযোগ। এ বছরই মনরেগা-য় ৬১ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। অথচ আগামী অর্থ বছরের জন্য ৬০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক সুরজিৎ মজুমদারের মতে, একশো দিনের কাজ তো চাহিদা-নির্ভর। তা সত্ত্বেও যথেষ্ট বরাদ্দ হচ্ছে না। যার অর্থ, গরিব মানুষের পাওনা মেটানো হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: বোঝাপড়ায় বিরল জুটি রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা
ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, এ বছর প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ১৫,৫০০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। সেই তুলনায় আগামী অর্থ বছরে ১৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে ঢাক পিটিয়েছেন তিনি। বাস্তব হল, চলতি অর্থ বছরেও ১৯ হাজার কোটি টাকাই প্রথমে বরাদ্দ ছিল। যা থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ কমিয়েছে মোদী সরকার। পীযূষ বলেছিলেন, মোদী সরকার গ্রামের আত্মা বজায় রেখে গ্রামেই শহরের পরিকাঠামো গড়ে তুলছে। কিন্তু তার জন্য তৈরি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রারবান মিশনের বরাদ্দ অর্থ পুরো খরচই হয়নি। তফসিলি জনজাতির জন্য বাজেটে মন ভোলানো কথা থাকলেও তাঁদের উন্নয়ন খাতেও ছাঁটাই হয়েছে।
এক কথায়, মোদীর বাজেটে টান পড়েছে সব ভাঁড়ারেই।