পড়ুয়াদের পেটে কিল, ক্ষুব্ধ রাজ্য

মাগ্গিগণ্ডার বাজারে স্কুলপড়ুয়াদের খাবার জোগানোর প্রকল্পে একটি পয়সাও না-বাড়ানোয় রাজ্যের শিক্ষাকর্তারা একই সঙ্গে ক্ষুব্ধ এবং চিন্তিত।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

কেন্দ্রীয় বাজেটে শেষ বার মিড-ডে মিল প্রকল্পে সামান্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছিল ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে। তার পরে দু’-দু’টি অর্থবর্ষে বরাদ্দ বাড়েনি। এ বারের বাজেটেও স্কুলে দুপুরের খাবার নিয়ে টুঁ শব্দটি করেননি অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। মাগ্গিগণ্ডার বাজারে স্কুলপড়ুয়াদের খাবার জোগানোর প্রকল্পে একটি পয়সাও না-বাড়ানোয় রাজ্যের শিক্ষাকর্তারা একই সঙ্গে ক্ষুব্ধ এবং চিন্তিত।

Advertisement

ক্ষোভ: নানা দিকে, বিশেষত গ্রামাঞ্চলে ঢালাও সুবিধা দেওয়া সত্ত্বেও মিড-ডে মিলের পাতে কিছুই পড়ল না কেন!? চিন্তা: দুর্মূল্যের বাজারে সামান্য বরাদ্দে বাচ্চাদের মুখে খাবার দেওয়া যাবে কী ভাবে? স্থায়ী নির্দেশ রয়েছে: সপ্তাহে দু’দিন মিড-ডে মিলের থালায় ডিম থাকতেই হবে। ‘ভেজ প্রোটিন’ বা উদ্ভিজ্জ প্রোটিন দিতে হবে রোজ। সঙ্গে ভাত-ডাল-তরকারি। কিন্তু এত কিছুর জন্য বরাদ্দ মোটে ৪.১৩ টাকা!

এই সামান্য টাকায় ফিরিস্তি মিলিয়ে স্কুলে মিড-ডে মিল দিতে গিয়ে মাথায় হাত পড়েছে রাজ্যের সর্বশিক্ষা মিশনের কর্তাদের। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় বাজেটে বরাদ্দ বাড়বে বলে আশা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এ দিন বাজেট পেশের সময়ে মিড-ডে মিলে বরাদ্দ বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী একটি শব্দও খরচ না-করায় রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কর্তাদের ক্ষোভ বেড়েছে।

Advertisement

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ২০০১ সালে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে দুপুরের খাবার দেওয়ার প্রকল্প চালু হয়। মূলত স্কুলছুট কমাতেই কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। ২০০১ সালে সর্বশিক্ষা মিশনের অধীনে এই উদ্যোগ শুরু হলেও তা সারা দেশে চালু হয় ২০০৪-এ, ইউপিএ আমলে। তার পর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষ পর্যন্ত প্রতি বছর মিড-ডে মিল প্রকল্পে বরাদ্দ বেড়েছে সাত শতাংশ হারে। ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে বরাদ্দ সামান্য বাড়ানো হয়। তার পর থেকে আর বাড়েনি। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষের বরাদ্দ অর্থই পাঠায়নি কেন্দ্র। বাচ্চাদের মুখের খাবারেও টান দিচ্ছেন ওঁরা। এত বেহিসেবি খরচ করতে পারছেন, অথচ বাচ্চাদের
মুখে খাবার জোগানোর বেলাতেই
যত অভাব!’’

বিকাশ ভবন সূ্ত্রের খবর, এখন প্রাথমিকে মিড-ডে মিলের জন্য পড়ুয়া-পিছু বরাদ্দ ৪.১৩ টাকা, উচ্চ প্রাথমিকে ৬.১৮ টাকা। এই খাতে বরাদ্দ অর্থের ৬০ শতাংশ দেয় কেন্দ্র। রাজ্য দেয় বাকি ৪০ শতাংশ। তবে পড়ুয়া-পিছু কত বরাদ্দ হবে, সেটা ঠিক করে কেন্দ্র। কিন্তু গত দু’টি আর্থিক বছরে একটি টাকাও বাড়ায়নি তারা। এ বারেও মিড-ডে মিল খাতে বরাদ্দ না-বাড়ায় স্কুলশিক্ষা দফতরের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। কেন না বাজার আগুন। একটি ডিমের দামই তো সাড়ে পাঁচ টাকা। এই অবস্থায় নির্দেশিকা মেনে ৪.১৩ এবং ৬.১৮ টাকায় কী ভাবে বাচ্চাদের পাতে ডিম-ভাত দেওয়া যাবে, ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না শিক্ষাকর্তারা। এই নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অভিভাবকদের বিক্ষোভ শিক্ষা দফতরের চিন্তা বাড়িয়েছে। স্কুলে বাচ্চাদের পাতে ডিম না-থাকায় জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বাবা-মায়েরা। তার উপরে মিড-ডে মিল নিয়ে নানান কারচুপির অভিযোগ এবং ক্ষোভ তো রয়েছেই।

শিক্ষাকর্তাদের বক্তব্য, কারচুপির অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু বরাদ্দ না-বাড়ায় ক্রমবর্ধমান বাজারদরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নির্দেশিকা অনুযায়ী মিড-ডে মিল দেওয়া যাবে কী ভাবে, সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা।

লেখাপড়া করে যে

• ১৩ লক্ষ শিক্ষকের জন্য সুসংহত বি-এড প্রশিক্ষণ • ডিজিটাল পোর্টাল দীক্ষার হাত ধরে পড়াশোনায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো • ৫০ শতাংশের বেশি তফসিলি উপজাতি এবং ২০ হাজারের বেশি সাধারণ উপজাতি জনসংখ্যার প্রতি ব্লকে একলব্য মডেলের আবাসিক বিদ্যালয় • ২০২২ সালের মধ্যে শিক্ষা পরিকাঠামোয় ১ লক্ষ কোটি টাকা লগ্নি • ভডোদরায় রেলওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় • বাড়ির নকশা ও স্থাপত্যবিদ্যার জন্য দু’টি স্কুল এবং আইআইটি ও এনআইটি-গুলিতে আরও ১৮টি স্কুল • বছরে ১,০০০ জন বি-টেক পড়ুয়াকে আইআইটি এবং আইআইএসসি-তে গবেষণার সুযোগ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement